করোনার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে তৈরী হওয়া সংশয় কেটে উঠুক

| শুক্রবার , ৭ মে, ২০২১ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে প্রতিদিন করোনায় মৃতের সংখ্যার বৃদ্ধির কারণে ভয় বাড়ছে। প্রতিনিয়ত আপডেট দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কেবল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে নয়, যখন কাছের মানুষের মৃত্যু হয়, তখন বোঝা যায় এই মৃত্যুর সংখ্যা কত বেশি এবং শোকটা কতটা ভারী। অচেনা থেকে চেনা গণ্ডির ভেতর ঢুকে পড়েছে করোনা। আর তার ফলে আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভয়াবহ রূপটা আরো প্রকট হয়েছে।
এ দিকে টিকা নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন চট্টগ্রামের মানুষ। প্রথম ডোজ যাদের দেওয়া হয়েছে তাদের সবাই এখন দ্বিতীয় ডোজ পাবেন কি-না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এর ফলে প্রথম ডোজ নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকা বহু মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন কিনা সংশয়ে আছেন তাঁরা। গত ৫ মে দৈনিক আজাদীর প্রতিবেদন পড়ে এই সংশয় আরো বৃদ্ধি হয়েছে তাঁদের ভেতরে। ‘ফুরিয়ে আসছে টিকা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা টিকার মজুদ ফুরিয়ে আসছে চট্টগ্রামে। মহানগরসহ জেলায় বর্তমানে মজুদ টিকার ডোজের সংখ্যা অর্ধ লক্ষেরও কম (৪৫ হাজারের সামান্য বেশি)। প্রথম ডোজ বন্ধ থাকলেও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে জেলায় (মহানগরসহ) ৭ হাজারের বেশি মানুষ টিকা নিচ্ছেন প্রতিদিন। সে হিসেবে মজুদ অর্ধ লাখের কম ডোজ টিকা দিয়ে বড় জোর এক সপ্তাহ মতো টিকাদান কার্যক্রম চালানো যেতে পারে। যদিও মজুদ টিকায় ঈদের আগ পর্যন্ত চালিয়ে নেয়ার আশা করছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোশেন (চসিক) করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী ও চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তাঁরা বলছেন, এর মাঝে শুক্রবারসহ সরকারি ছুটির দিন রয়েছে। যেদিনগুলোতে টিকাদান বন্ধ থাকে। তাই মজুদ টিকায় ঈদের আগ পর্যন্ত চালিয়ে নেয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি। এদিকে ঈদের আগ পর্যন্ত চালিয়ে নেয়ার আশা প্রকাশ করলেও মহানগরের টিকার মজুদ শেষ হচ্ছে এর আগেই। চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া ৪ মে তথ্য অনুযায়ী- মহানগরে আর ২১ হাজার ৮৯০ ডোজ টিকা মজুদ রয়েছে। আর একদিনে শুধু মহানগরে টিকা নিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষ। সে হিসেবে মজুদ ২১ হাজার টিকায় ৫ কর্মদিবসের বেশি চালানো নিয়ে সংশয়ের কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- দৈনিক ৪ হাজার মানুষ টিকা নিলেও ২১ হাজার টিকা ৫ কর্মদিবসের মধ্যেই শেষ হয়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে ২৩ হাজারের সামান্য বেশি ডোজ টিকা মজুদ রয়েছে। আর দিনে আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ টিকা নিচ্ছেন উপজেলা পর্যায়ে। সে হিসেবে মজুদ টিকায় উপজেলাগুলোতে এক সপ্তাহের বেশি টিকাদান কার্যক্রম চালানো যাবে বলে মনে করেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। ঈদের আগ পর্যন্ত মোটামুটি সমস্যা হবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সেই হিসেবে প্রথম ডোজ নেয়া এক লাখের বেশি করোনার টিকাগ্রহীতার ২য় ডোজ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে চট্টগ্রামে। ঢাকা থেকে টিকার পরবর্তী চালান না পেলে ১ম ডোজ নেয়া এসব টিকাগ্রহীতা যথাসময়ে তাদের ২য় ডোজ পাবেন বলে মনে হয় না। প্রতিবেদনে সম্ভাব্য এ সংকটের কথা উল্লেখ রয়েছে এবং তা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে, নির্ধারিত সময়ের এক বা দুই সপ্তাহ পার হলেও দ্বিতীয় ডোজের কাঙ্ক্ষিত এসএমএস পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ প্রচুর। এদিকে মহানগরের কেন্দ্রগুলোতে এসএমএস ছাড়া টিকা দেয়াও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন অনেকে। দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এসএমএস না আসায় টিকা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। এ সমস্যা নিরসন হওয়া দরকার। সফটওয়্যার সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তা দ্রুত সারিয়ে নেওয়া উচিত। করোনাকালে প্রথম যে বিষয়টি ভাবা দরকার, সেটি হলো জনসাধারণকে আশ্বস্ত করা এবং যাতে তাদের মনোবল ভেঙে না পড়ে, তার ব্যবস্থা করা। সেই জায়গায় টেনশন বৃদ্ধি পায়, এমন কোনো ঘটনা যেন না ঘটে-তার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে