গত কয়েকশত বছরের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেলে বিশ্বে প্রতি এক’শ বছরে একটি মহামারি হানা দেয় এবং তাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ হয়েছিল ইউরোপে যার নাম ছিল স্প্যানিশ ফ্লু। ১৯১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয়ে তা শেষ হয় ১৯২০ সালের এপ্রিল মাসে । এটির প্রচলিত নাম ছিল ইনফ্লুয়েঞ্জা। এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল বিশ্বের প্রায় পঞ্চাশ কোটি মানুষ যা তখন বিশ্বের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ। এই মহামারিতে কত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না তবে ধারণা করা হয় এই সংখ্যা দুই থেকে পাঁচ কোটি পর্যন্ত হতে পারে। তারও আগে নিয়মিত বিরতি দিয়ে আনুমানিক প্রতি একশত বছর অন্তর ইউরোপ সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে নানা রকমের মহামারি দেখা দিয়েছে এবং সেই মহামারি শহর বন্দর নগর উজাড় করে দিয়েছে। তবে এই সব মহামারি যতটা না ইউরোপে ঘটেছে তেমনটা বিশ্বের অন্যান্য দেশে তেমনটা দেখা যায় নি কারণ তখন বিশ্বায়ন বলে কোন কথা বা ধারণা তখন প্রচলিত ছিল না। মানুষে ভ্রমণ করতো কম। বর্তমান বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতি দিন বিশ্বের এক প্রান্ত হতে আর এক প্রান্তে ছুটে বেড়ায়, শহর হতে গ্রামে যায় এবং যাওয়ার সময় এই সব রোগ বালাইয়ের বীজ বহন করে নিয়ে যায়। ধারণা করা হয় বাংলাদেশে করোনা মহামারি বহনকারি প্রথম ব্যক্তিটা মার্চ মাসের প্রথম দিকে ইতালি হতে বাংলাদেশে এসেছিল।
আমাদের দেশে সেই বৃটিশ আমল হতে যে রোগ গুলো মহামারি আকারে দেখা দিত তার মধ্যে ছিল কলেরা, কালাজ্বর বা ম্যালেরিয়া, গুটি বসন্ত ইত্যাদি। এই সব রোগেও অনেক মানুষের মৃত্যু হতো। বাংলায় ১৮১৭ সাল হতে ১৮২৪ সাল যে কলেরা মহামারি দেখা দিয়েছিল তাতে প্রায় দেড় কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। এর পর কয়েক বছর পর পর এই মহামারি বাংলায় হানা দিত এবং এর ফলে প্রচুর মানুষের মৃত্যু ঘটতো। বাংলা হতে বিলেত ফেরত অনেক ইংরেজ সৈনিক বা কর্মচারি এই কলেরা রোগের জীবাণু তাদের দেশে নিয়ে গেছে এবং সেই দেশে এই রোগে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সমস্যা ছিল তখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের বর্তমান সময়ের মতো এত উন্নতি হয় নি। আর মানুষের সচেতনতারও অভাব ছিল।
গুটি বসন্ত একটি ভয়াবহ রোগ এবং তা সাধারণত বছরের শেষে শুরু হতো। ছোট বেলায় দেখেছি বছরের শেষে পৌরসভা শহরের মানুষকে টিকা দেয়ার জন্য কয়েকশত স্বাস্থ্য কর্মী পাড়ায় মহল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মানুষকে টিকা দিত। এই কাজে বিশেষ করে নিয়োজিত থাকতো মহিলারা যাদের প্রচলিত নাম ছিল টিকা দিদি। তাদের সকলের হাতে একটা কালো চামড়ার ব্যাগ। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিশেষ করে কম বয়সি ছেলে মেয়েদের বাহুতে তারা দুইটা টিকা দিত। তবে এই টিকা ইনজেকশনের মতো ছিল না। ছোট শিশি হতে টিকা বের করে বাহুতে দুটি ফোটা দিত তারপর একটি ছোট যন্ত্র, অনেকটা বল পয়েন্ট পেনের মতো যার মাথায় থাকতো ছোট ছোট ধারলা স্পাইক, তা দিয়ে একটা মোচড় দিত। টিকা দেয়ার আগে সেই ধারাল স্পাইকটা আগুনে গরম করা হতো। আমাদের প্রজন্মের অনেকের হাতে এখনো সেই টিকার দাগ আছে । সেই টিকার অবশ্যই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতো আর তা ছিল রাতে জ্বর আসা আর টিকা দেয়ার স্থানটি ফুলে যাওয়া। মা দাদিরা ছিলেন তখন বাড়ির সবচেয়ে বড় চিকিৎসক। পাতলা কাপড়ে গরম ভাত নিয়ে ফোলা জায়গায় তাঁর সেঁক দিতেন। দুদিনেই সব ঠিক। সর্বশেষ গুটি বসন্ত অনেকটা মহামারি হিসেবে দেখা দিয়েছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়। সরকারে সমন্বিত কর্মসূচীর কারণে বর্তমানে বাংলাদেশে কোন রোগ আর মহামারি হিসেবে দেখা দেয় না। এই সবের মধ্যেই বিশ্বায়নের এই যুগে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় ২২৫টি দেশে কোভিড-১৯ বা করোনা নামের এক রহস্যজনক রোগ মহামারি হিসেবে দেখা দিল। এই পর্যন্ত এই রোগে সোয়া কুড়ি লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে, তারপর ব্রাজিলে।
করোনা বা কোভিড-১৯ মহামারি হিসেবে দেখা দেয়ার পর হতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই রোগের চিকিৎসা আর প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানিরা উঠে পরে লাগলেন। সকলের আগে সফল হলো ইংল্যান্ডের অঙফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। অঙফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত করোনা ভাইরাসের টিকার পেটেন্ট তারা সেই দেশের বিখ্যাত ঔষধ প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রোজেনিকোকে বিক্রি করেছে। অ্যাস্ট্রোজেনিকোর সদর দপ্তর বৃটেনে হলেও এটি একটি ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক কোম্পানি। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯৯ সালে। অ্যাস্ট্রোজেনিকো তাদের ভারতীয় এজেন্ট পুনাতে অবস্থিত বিশ্বের সেরা টিকা প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটকে এই অঞ্চলের জন্য এই টিকা প্রস্তুত করার অনুমতি দিয়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউট বিশ্বের বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৬ সালে একজন পার্সি উদ্যোক্তা সাইরাস পুনেওয়ালা এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্বের মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ টিকা তৈরি হয় ভারতে। দেশটি ষোল প্রকার টিকা উৎপাদন করে যা যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২৩টি দেশে রপ্তানি করা হয়। কোভিড-১৯ মহামারি যখন ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনে আঘাত করলো তখন কেউ ধারণা করতে পারেনি এটি কত ভয়াবহ হতে পারে। জানুয়ারি মাসে যখন এই ভয়াবহ রোগ চীনের সীমান্ত অতিক্রম করে ইউরোপে প্রবেশ করলো তখন এই রোগটির ভয়াবহতা বুঝা গেল।
বাংলাদেশে এই রোগটির প্রথম প্রবেশ ঘটে মার্চ মাসে যা ইতোপূর্বে বলা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য দ্রুত প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। প্রথম দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছুটা অদক্ষতার পরিচয় দিলেও বিভিন্ন মহল হতে নানা ধরনের সমালোচনার মুখে পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বস্তুত পক্ষে সারা বিশ্ব তখন সম্পূর্ণভাবে অচল। এরই মধ্যে গবেষণা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার যা কিনা বিশ্বের এক নম্বর ওষুধ প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান। তারা কিন্তু তাদের এই গবেষণা যুক্তরাষ্ট্রে করেনি, করেছে জার্মানিতে। কেউ এ নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলেনি। এই সব জিনিস বুঝতে হলে বুঝতে হবে বিশ্বায়ন কাকে বলে। লক্ষ টাকা দামের আই ফোন যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড। তা বর্তমানে সংযোজন করা হয় চীন, ভারত, ব্রাজিল ও অন্যান্য কোন দেশে। এই যে এত বড় বোয়িং এয়ার ক্রাফট তার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, ষ্টিলের সমান্তরাল বারের প্রস্ততকারি প্রতিষ্ঠান ভারতের টাটা ষ্টিল। কেউ বলেনা বোয়িং ভারতে তৈরি। বিশ্বের অনেক নামি দামি গাড়ি প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান তাদের গাড়ির ভিতরের তাপ নিরোধক ইন্সোলেটর বানায় বাংলাদেশের পাট দিয়ে। বর্তমান বিশ্বের বাজারে কোন পণ্যে লেখা থাকে না মেড ইন অমুক দেশ। থাকে শুধু কোম্পানির লোগো।
তামাদি মতলববাজ পন্ডিত আর রাজনীতিবিদরা বলতে শুরু করলো বাংলাদেশ ভারতীয় টিকা কেন আনলো? ফাইজারেরটা কেন নয়? এরা বুঝতে চাইলো না ফাইজারের টিকা মাইনাস ষাট হতে আশি ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হয় যা বাংলাদেশে কেন এশিয়ার অনেক দেশে সম্ভব নয়। সেই তুলনায় অক্সফোর্ডের টিকা দুই হতে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করলে চলবে যার সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। সব ঠিক আছে তবে এটি আনার দায়িত্ব সরকার বেক্সিমকোকে কেন দিল? এরা জানে না এই দায়িত্ব দেয়ার সাথে সরকারের কোন সম্পর্ক নেই। বেঙ্মিকো সেরাম ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশের এজেন্ট। তাদের সকল ধরনের ওষুধ সংরক্ষণ ও পরিবহনের সুবিধা রয়েছে। এই তথ্যটা সম্ভবত অনেকে জানে না বাংলাদেশ হতে দুটি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ’র সকল কঠিন মানদণ্ড মেনে সেই দেশে ওষুধ রপ্তানি করে। একটি বেঙ্মিকো আর দ্বিতীয়টি স্কয়ার। এটি তারা পেরেছে ২০১৬ সাল হতে। এশিয়ার খুব কম দেশই এই সুবিধা পেয়েছে। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে প্রায় শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণ। শুধু মাত্র এন্টি ক্যান্সার ড্রাগ, হরমোনাল ড্রাগ বা ইনসুলিনের মতো কিছু ওষুধ এখনো বাহির হতে আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশ হতে প্রায় একশত সত্তরটি দেশে ওষুধ রপ্তানি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান তাদেরও র্বেশির ভাগ কাঁচামাল আমদানি করে ভারত আর চীন হতে।
বাংলাদেশ যে দুর্যোগ মোকাবেলায় একটি রোল মডেল তা তারা আর একবার প্রমাণ করলো এই মহামারি মোকাবেলার জন্য ভারতের আগে বাংলাদেশ সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুত করা অঙফোর্ডের টিকা বুকিং দিয়ে। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী অর্থ মন্ত্রীকে একহাজার কোটি টাকা আগেই পৃথক করে রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। টিকার দাম নিয়ে ক’দিন ধরে চললো নানা অসত্য বাক বিতন্ডা। এক রাজনীতিবিদ বললেন এই টিকা আসলে তা ভিআইপিরা সব শেষ করে দেবে। ক’দিন পর তিনি আবিষ্কার করলেন এই টিকা দিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে তার দলের সকল নেতা কর্মীকে মেরে ফেলতে। একই দলের আর একজন আবিষ্কার করলেন বৃটেনে যদি রানি টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে এই টিকা কর্মসূচির উদ্বোধন করতে পারেন তা হলে শেখ হাসিনা কেন নয়? এই আজব তথ্য একমাত্র তার পক্ষেই দেয়া সম্ভব। এরা বুঝতে পারেন না টিকা দেয়াটা সম্পূর্ণ ভাবে নিজের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। আপনি নিবেন কি না তা আপনি ঠিক করবেন।
ভারত উপহার হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউট হতে কিনে বিশ লক্ষ ডোজ টিকা প্রথমেই বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে। তারপর বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থে কেনা পঞ্চাশ লক্ষ ডোজের প্রথম চালানটি এসে পৌঁছেছে। ৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এই টিকা প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে উদ্বোধনী পর্বে বিভিন্ন পেশার পাঁচজন স্বেচ্ছায় টিকা নেন। তারপর বাকি সময়ে আরো চব্বিশজনকে এই টিকা দেয়া হয়। প্রথম যিনি টিকা নেন তিনি একই হাসপাতালের একজন সেবিকা, রুনু ভেরোনিকা কস্তা। এই পাঁচজনকে অভিনন্দন। ৭ ফেব্রুয়ারি হতে সারা দেশে এই টিকা দান কর্মসূচী চালু হবে। চট্টগ্রামে টিকার প্রয়োজনিয় চালান এসে পৌঁছেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ টিকা দানকারি দেশ হিসেবে বিশ্বে চুয়ান্নতম দেশ হিসেবে নিজেদের স্থান করে নিল। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পর বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় দেশ যার দেশের মানুষ টিকা পাচ্ছে বা পাবে। এর কৃতিত্বতো সরকারকে দিতেই হয় আর তার জন্যতো একজনকে আওয়ামী লীগের বা শেখ হাসিনার সমর্থক হওয়ার প্রয়োজন নেই। সারা ইউরোপ জুড়ে এখন অক্সফোর্ডের টিকার জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে কারণ তাদের চাহিদার তুলনায় যোগান কম। অ্যাস্ট্রোজেনিকো বলেছে তারা অর্ডার দিয়েছে দেরীতে। বুধবার লন্ডনের বিখ্যাত দৈনিক টাইমস পত্রিকা অঙফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের বরাত দিয়ে খবর দিয়েছে যেখানেই তাদেরও টিকা দেয়া হয়েছে সেখানেই করোনার প্রকোপ কমেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার র্যাংকিং-এ বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সেবাদানকারি দেশ হিসাবে ৮৫তম আর করোনা মোকাবেলায় বিশতম। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। যুক্তরাষ্ট্র সহ ইউরোপের সকল দেশ বাংলাদেশের অনেক নীচে অবস্থান করছে। এই হিসাব বা র্যাংকিং বাংলাদেশ বা আওয়ামী লীগ করে নি।
টিকা আসবে কি আসবে না, আসলে তা কি গো মূত্র হবে না গঙ্গার পানি, এটি কি হালাল টিকা না হারাম, এই টিকা নিলে সোয়াব হবে না পাপ, ফাইজার হতে টিকা না নিয়ে ভারত হতে কেন টিকা নিলো সরকার, এই টিকা প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হোক, টিকা নিয়ে এমন সব বাহাস আর ঠোকাঠুকি আরো হয়তো কিছুদিন চলবে। এরপর হয়তো অন্য কোন কারণে কিছু লোকের মৃত্যু হবে যেমনটি হয় প্রতিদিন। তারপর শুরু হবে বলা ‘বলেছিলাম না এই টিকা নিলে মৃত্যু নির্ঘাত’ মাতম। তারপর ওয়ান ম্যান পার্টির কেউ একজন হুংকার ছাড়বেন এই মুহূর্তে সরকারের পদত্যাগ চাই। তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তারা যে বেঁচে আছেন তা জানান দিতে হবেতো। তারা হয় এই সব ব্যাপারে নিজেরা সম্পূর্ণ অজ্ঞ বা দেশের সব মানুষকে গন্ড মূর্খ মনে করেন। অথবা জেনে শুনেই মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। আল্লাহ তাদের হেদায়াত দান করুন। টিকা আবিষ্কার হওয়ার আগে চারিদিকে কেমন জানি অন্ধকার মনে হচ্ছিল। বর্তমানে কিছুটা হলেও আলোর ঝলকানি দেখা যাচ্ছে। টিকা দেয়ার জন্য নাম রেজিস্ট্রেশন করে অপেক্ষা করছি তারিখ পাওয়ার জন্য। আশা করি যাদের টিকা নেয়ার যোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে তারা কোন কিছুতে বিভ্রান্ত না হয়ে করোনার টিকা নেবেন। সফল হোক বাংলাদেশের এই টিকা দান কর্মসূচি।
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়