করোনাভাইরাস শীতে ঝুঁকি কতটা?

| শনিবার , ১০ অক্টোবর, ২০২০ at ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ

আশ্বিন শেষ প্রায়, শীত শুরু হতে দেরি নেই বেশি। এই মহামারীকালে উত্তুরে হওয়া বাংলাদেশে পৌঁছানোর আগেই করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কবার্তা আসতে শুরু করেছে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। বলা হচ্ছে, শীতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ নতুন করে বাড়তে পারে। আলোচনা হচ্ছে সংক্রমণের সম্ভাব্য ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ নিয়েও। কিন্তু বাংলাদেশে সেই ঝুঁকি আসলে কতটা? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত সেপ্টেম্বরেই জানিয়েছিল, শীতের আগেই উত্তর গোলার্ধের বিভিন্ন অঞ্চলে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সংক্রমণ। শীতকালে মহামারী আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশেও যে শীত মৌসুমে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে, সেই শঙ্কার কথা জানিয়ে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। সরকার প্রধানের নির্দেশনার পর রোডম্যাপ ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলার কথা বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম আলমগীর অবশ্য বলছেন শীতের দেশে শীতের দিনে ঝুঁকি যতটা বাড়বে, উষ্ণমণ্ডলের দেশ বাংলাদেশে তেমন নাও হতে পারে। শীতে যদি করোনাভাইরাস অনেক বেশি ভয়ঙ্কর নাও হয়ে ওঠে, তারপরও বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাপন পদ্ধতির কারণে শীত মৌসুমে ঝুঁকি বাড়ার বেশ কয়েকটি কারণের কথা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। তাদের ভাষ্যে, ঋতু পরিবর্তনের সময় পরিস্থিতি কতটা নাজুক হবে তা নিভর্র করছে মৌসুমী রোগ, মানুষের আচরণ এবং সরকারের ব্যবস্থাপনার ওপর। তবে ভ্যাকসিন বা কার্যকর কোনো ওষুধ যেহেতু এখনও তৈরি হয়নি, গ্রীষ্মের মত শীতেও করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার উপায় ওই একটাই- কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
শীতের দেশ, গরমের দেশ: এদিকে যুক্তরাজ্যের অ্যাকাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলেছিল, শীতের সময় দেশটির পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ হলে সেপ্টেম্বর থেকে আগামী জুন পর্যন্ত সময়ে কোভিড হাসপাতালগুলোতে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। মহামারীর প্রথম ধাক্কায় যুক্তরাজ্যে ৪০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। গত জুলাই থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে আসছিল, কিন্তু সেপ্টেম্বর থেকে আবার তা বাড়তে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যের মত শীতপ্রধান অনেক দেশেই ঋতু পরিবর্তনের পর দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ শুরু হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অনেকের ধারণা। তবে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম আলমগীর মনে করেন, এক বছরের চক্র শেষ না হলে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতিপ্রকৃতির ওপর শীত-গ্রীষ্মের প্রভাব নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। এখন ইউরোপ বা আমেরিকা থেকে হাইপোথিসিস দেয় যে, শীত আসলে করোনাভাইরাস বেড়ে যাবে। বাংলাদেশে কিন্তু সিজনগুলো ভিন্ন। ওখানে শীত মানে তাপমাত্রা ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেল। বাংলাদেশে খুব শীতেও ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আমরা এটাকে শীত বলি, কিন্তু এটা তো ওরকম শীত না। তাপমাত্রা নিয়ে এখন কিছু না বলাই আসলে বেটার। পাশের দেশ ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলের আবহাওয়া বাংলাদেশের সঙ্গে মিলে যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংবাদপত্র পড়ার অভ্যাস
পরবর্তী নিবন্ধভার্চুয়াল অংশগ্রহণে শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি প্রতিযোগিতা