করিডোর নিয়ে এত গোপনীয়তার কারণ কী, সরকারকে খসরু

| রবিবার , ১ জুন, ২০২৫ at ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গোপনীয়তার কারণ জানতে চেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ বিষয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, করিডোর নিয়ে এই সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। দুই সার্বভৌম রাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি অথবা নিরাপত্তা কাউন্সিলে পাস না হলে এ বিষয়ে জাতিসংঘের ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই। করিডোর নিয়ে সরকারের অবস্থান এখন পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। তারা কী চায়, বোঝা যায় না। প্রথমে অস্বীকার করলেও সরকার পরবর্তী সময়ে করিডোর নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। কাতারেও আলোচনা করছে। এত গোপনীয়তার কী আছে? খবর বিডিনিউজের।

এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, করিডোর বিতর্কিত হওয়ার পর এখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে চ্যানেলের কথা। এই দুটির মধ্যে টেকনিক্যাল পার্থক্য আছে। তা করতে চাইলেও সরকারের পরিষ্কার করা উচিত। শেখ হাসিনা যেভাবে রাষ্ট্রের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অন্য রাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষা করেছে এই সরকার সেদিকে যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মিয়ানমারে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, আরাকান আর্মির মাধ্যমে করিডোর দিয়ে রোহিঙ্গাদের কেন ফেরত পাঠাতে হবে? শর্তসাপেক্ষে কেন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে হবে? সম্মানজনকভাবে দেশে ফেরা রোহিঙ্গাদের অধিকার। আরাকান আর্মি চীনাদের একটি গ্রুপের সহায়তায় সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত। আরাকান আর্মির সঙ্গে এই চুক্তির নিশ্চয়তা কে দেবে? বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। ক্ষমতার প্রতিযোগিতার শিকার হওয়া যাবে না।

ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তা : প্রেক্ষিত মানবিক করিডোর’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, শুধু একটি দল নয়, অনেক দলই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। তাড়াতাড়ি ভালো নির্বাচন করলেই নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডার বাইরে। এমন তৎপরতা বন্ধ করুন। এটি স্বাধীনতাসার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। অনেক জায়গাতেই মানবিক করিডোর সামরিক করিডোরে পর্যবসিত হয়েছে।

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আর একটা রোহিঙ্গাকেও আমরা চাই না। করিডোর নিয়ে কাজ করলে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতে হবে। গোপনে নয়, এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ঘোষণার পরও নতুন করে প্রবেশ করেছে। করিডোর নিয়ে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা ভালো না। এমন সিদ্ধান্তে এই সরকারের যাওয়া দরকার ছিল না। এই সরকারের মূল কাজ ছিল নির্বাচন দেওয়া। বিচার এবং সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন বিলম্বের সুযোগ নেই। বিএনপি একা নয়, অনেক দলই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়।

সেন্টার ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যানালিসিসের আয়োজনে বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. জগলুল আহসান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিজিএমইএ নির্বাচনে ফোরামের নিরঙ্কুশ জয়
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম বন্দর হবে বিশ্বের প্রভাবশালী