রাজনৈতিক দলগুলো অল্প সংস্কারের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে একমত হলে আগামী ডিসেম্বরের ভেতরে নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। আর সংস্কার কার্যক্রম প্রসারিত হলে নির্বাচন আরও ছয় মাস পরে হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মার্কিন সাবেক দুই কূটনীতিক উইলিয়াম বি মাইলাম ও জন ড্যানিলোভিচের সঙ্গে সাক্ষাতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট ও শরণার্থীদের জন্য কমতে থাকা আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রভাব, আগের সরকারের সময় পাচার হওয়া বিপুল অর্থ উদ্ধারের উদ্যোগ ও সার্ক পুনর্জাগরণের চেষ্টা নিয়েও আলোচনা হয়। খবর বিডিনিউজের।
গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যয় নিয়ে দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। এ সরকারের গঠিত সংস্কার কমিশনগুলো ইতোমধ্যে তাদের সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিয়েছে। সেগুলো নিয়েই দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে সরকার। সাক্ষাতে ইউনূস বলেন, ছয়টি কমিশনের সুপারিশ করা সংস্কারের বিষয়ে সংলাপ শেষ হওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই চার্টারে স্বাক্ষর করবে। এ চার্টার আমাদের পথ দেখাবে। অন্তর্বর্তী সরকার এই চার্টারের কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে, আর বাকিগুলো রাজনৈতিক সরকার বাস্তবায়ন করবে বলে জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘রাইট টু ফ্রিডম’ এর সভাপতি উইলিয়াম বি মাইলাম ও নির্বাহী পরিচালক জন ড্যানিলোভিচের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। মাইলাম নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশে মার্কিন দূত হিসেবে ছিলেন। আর ড্যানিলোভিচ ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি চিফ অব মিশন ছিলেন।
সাক্ষাতে মাইলাম অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান বড় রকমের সংস্কারের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেছে। ড্যানিলোভিচ বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক বিষয়গুলো তুলে ধরা এবং ভুয়া সংবাদ ও অপতথ্য মোকাবেলায় জোর দেওয়ার কথা বলেন।
তারা দুজনেই ‘রাইট টু ফ্রিডম’ এর কার্যক্রম বাংলাদেশে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য সংস্থাটির আগ্রহ তুলে ধরেন। মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় সংস্থাটির কাজ ও সাবেক দুই মার্কিন কূটনীতিকের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন মুহাম্মদ ইউনূস।