কমলা সুরাইয়া (১৯৩৪–২০০৯)। যিনি তার ছদ্মনাম মাধবীকুট্টি নামে পরিচিত। দক্ষিণ ভারতের একজন লেখক যিনি ইংরেজি ও মালয়লাম ভাষায় সাহিত্যচর্চা করেছেন। তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নারী, শিশু, রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখেছেন। কেরালায় তার লেখা ছোটগল্প ও আত্মজীবনী ব্যাপক জনপ্রিয়। তাকে তার প্রজন্মের নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে মার্চ ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রদেশের মালাবার জেলার পুন্নায়ুরকুলাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতার নাম ভি. এম. নায়ার এবং মাতার নাম বালামণি আম্মা। তিনি জন্মেছিলেন রক্ষণশীল হিন্দু রাজকীয় নায়ার পরিবারে। জন্মের পর তার নাম রাখা হয়েছিল কমলা। তিনি তার লেখালেখির অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তার মা বালামণি আম্মা ও নালাপত নারায়ণ মেননএর কাছ থেকে। মা ছিলেন মালয়ালম ভাষার বিখ্যাত কবি। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই ডিসেম্বর তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন ও নিজের নাম পরিবর্তন করে কমলা সুরাইয়া রাখেন। তিনি মালয়ালম ভাষায় ছোটগল্প ও ইংরেজিতে কবিতা রচনার জন্য বিখ্যাত। তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কলাম লিখেছেন। তার লেখা কলামে ফুটে উঠেছে নারীদের বঞ্চনার কথা, ফুটে উঠেছে শিশু অধিকারের কথা, ফুটে উঠেছে রাজনীতির কথা। তিনি কলাম লিখে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তার রচিত কাব্যগ্রন্থ সামার ইন ক্যালকাটা ভারতীয় ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। বইটি সমালোচক ও পাঠকমহলে সমাদৃত হয়। তিনি ৪২ বছর বয়সে তার আত্মজীবনী ‘এন্তে কথা’ রচনা করেন। লেখনীটি বেশ সাহসিকতাপূর্ণ ছিল। মালয়লাম ভাষায় লিখিত বইটি পরে মাই স্টোরি শিরোনামে ইংরেজিতে অনূদিত হয়। বইটি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। তিনি মালয়লাম ভাষায় বহু ছোটগল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: ‘থানুপ্পু’, ‘পাকশিউদে মানাম’, ‘চান্দানা মারাঙ্গাল’, ‘নীরামাথালাম পুথা কালাম’( উপন্যাস) প্রভৃতি। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হচ্ছে-‘দ্য সাইরেন্স’, ‘সামার ইন ক্যালকাটা, ‘দ্য ডিসেড্যান্টস’, ‘দ্য ওল্ড প্লেহাউস অ্যান্ড’, ‘আদার পোয়েমস’, ‘দ্য স্ট্রেঞ্জার টাইমস’, ‘টুনাইট’, ‘দিস স্যাভেজ রাইট’, ‘কালেক্টেড পয়েমস’, ‘দ্য অ্যানামালাই পোয়েমস’, ‘ওনলি দ্য সোল নোজ হাউ টু সিং’ ,‘মাই মাদার এট সিক্সটি সিক্স’, ‘ইয়া আল্লাহ’। তার রচিত সাহিত্যকর্ম ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, রাশিয়ান, জার্মান ও জাপানি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।