উত্তাপ ছড়ানোর পরে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে অবশেষে কমছে চিনির দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি চিনির দাম কমেছে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এর আগে চিনির রেকর্ড দাম বৃদ্ধি হয়।
খাতুনগঞ্জের চিনি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধির প্রভাবে কয়েক সপ্তাহ ধরে চিনির বাজার অস্থির। তবে বিক্রি কমার জেরে চিনির দাম কেজিতে ২ টাকা কমেছে। ভোক্তারা বলছেন, চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত সরকারের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারিতে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭২৫ টাকায়। গত এক সপ্তাহে সেই চিনির দাম ওঠে ২ হাজার ৭৭৫ টাকা পর্যন্ত।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন চিনির আড়তদার জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার জন্য অনেক প্রথা আছে, যেগুলো আবার আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটি বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয় তার বাজারদর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্য আসেনি, কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে তেল ও চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়।
আল মদিনা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী এহসান উল্লাহ জাহেদী আজাদীকে বলেন, চিনির বাজার কয়েক সপ্তাহ ধরে ওঠানামা করছে। সকালে এক দাম তো বিকালে আরেক দাম। সরকারের উচিত মিল গেটে চিনির মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন আজাদীকে বলেন, চিনির বাজারে ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে ছিনিমিনি খেলছেন। তবে এতে সরকার অনেকটাই দায়ী। সরকারি চিনিকলগুলোর বিপণন অব্যবস্থাপনার কারণে বেসরকারি চিনির আমদানিকারকরা কারসাজি করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাই সরকারকে সরকারি চিনিকলগুলোর সক্ষমতা বাড়িয়ে বাজারে বিপণন করা দরকার। তবেই চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।