কদর বাড়ে ‘অতিথি’ কসাইয়ের

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৯ জুলাই, ২০২২ at ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ

অন্য সময় যাই হোক না কেন, কোরবানির ঈদ এলেই চাহিদা বেড়ে যায় কসাইদের। পেশাদার কসাইয়ের পাশাপাশি এক দিনের জন্য অনেকে ‘অতিথি কসাই’ বনে যান। তাদের পেতেও এবার হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
জামালখানের সরকারি চাকরিজীবী রাকিবুল ইসলাম মিয়া ঈদের দুই দিন আগে গতকাল শুক্রবার হন্যে হয়ে কসাই খুঁজছিলেন। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে কসাই খুঁজছি। কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না। ‘অতিথি কসাই’ খুঁজে দেখেন- বলতেই জবাব এল, ভাই, অতিথি কসাই-জাত কসাই সব খুঁজছি, পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই বলছে, তাদের কাজের চুক্তি হয়ে গেছে। যারা সচরাচর কসাইয়ের কাজ করেন না, শুধু কোরবানির ঈদের দিনই গরু জবাই থেকে শুরু করে কাটাকাটির কাজটি করে দেন, তাদেরই অনেকে ‘অতিথি কসাই’ বলে ডাকেন। এদের অনেকে চট্টগ্রামের বাইরে থেকেও আসেন।
গোসাইলডাঙার বাসিন্দা আওলাদ হোসেন জোগাড় করেছেন এই রকমই ‘অতিথি কসাই’, তার নাম জব্বার বলে জানালেন। জাত কসাই পাব কোথায়? এ (জব্বার) প্রতি ঈদে গরু জবাই ও ছাড়ানোর কাজ করে। অন্য সময় আমাদের এলাকায় ডিস লাইনে কাজ করে, বলেন আওলাদ।
পেশাদার কসাইরা গরুর দামের ওপর ভিত্তি করে জবাই ও মাংস কাটার জন্য টাকা নেন। তবে ‘অতিথি কসাই’রা এই বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমেই ঠিক করেন। আওলাদ গত বছর কসাইকে গরুর দামের ওপর ১১ শতাংশ হারে টাকা দিয়েছেন। এবার তারা আরো বেশি চাওয়ায় ‘অতিথি কসাই’ ঠিক করেন তিনি। ‘অতিথি কসাই’দের নিয়ে পেশাদার কসাইদের বেশ অভিযোগ রয়েছে। চকবাজারের কসাই আইয়ুব বলেন, এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা পাকাপাকি হয়েছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার এসে ওই ব্যবসায়ী জানান, তার গরু বানাতে হবে না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সিজনাল কসাই ম্যানেজ করেছেন তিনি।
চকবাজারের দুই ‘অতিথি কসাই’ চিনা ও ভুট্টা। চিনা চকবাজারে মনোহারি দোকানে কাজ করেন, ভুট্টা কাজ করেন শোলকবহরে একটি জুতার দোকানে।
ভুট্টা বলেন, দুই দিনে (ঈদের দিন ও পরদিন) প্রায় ১৫টি গরু বানাতে পারি। এতে বেশ আয় হয়। গত ১১ বছর ধরে কোরবানির ঈদে গরু কাটার কাজ করছেন চিনা ও ভুট্টা। ভুট্টা বলেন, প্রথম প্রথম অনেক চামড়া নষ্ট করেছি, কিন্তু এখন আর হয় না।
‘অতিথি কসাই’ যেখানে বাড়তি আয় নিয়ে খুশি পেশাদার কসাইদের দুশ্চিন্তা সেখানে কাজের চাপ নিয়ে। মনসুরাবাদের কসাই আলী, বকর ও শিশির জানান, তাদের প্রতিজনের দিনে আট থেকে ১০টি গরু জবাই করে কেটে দেয়ার সামর্থ্য থাকলেও কাজ নিয়েছেন বেশি। ‘গুণে দেখেছি, ১৫ জনকে কথা দিয়েছি গরু বানিয়ে দেব বলে। অতিরিক্ত একটি দল বানিয়ে বাকি কাজ করতে হবে আর কি,’ বলেন বকর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিনজো আবেকে গুলি করে হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধনগরীর বাসা-বাড়ির নিরাপত্তায় ৪শ পুলিশ