চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের আচরণবিধির ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিলেন নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী প্রচারণায় গাড়ি বহর নিয়ে কোনো ধরনের শোডাউন করা যাবে না সাফ জানিয়ে দিয়েছেন চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
গতকাল তিনি আজাদীকে জানান, নির্বাচনে কোনো প্রার্থী গণজমায়েত করতে পারবেন না। প্রার্থীদের প্রচারণায় স্বাস্থ্যবিধি ও আচরণবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। প্রচারণায় যারা অংশ নিবেন প্রত্যেককে মাস্ক পরতে হবে। যতটুকু সম্ভব সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। আচরণবিধি মনিটরিংয়ের জন্য ৪১ ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে নামছেন। মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারণা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, প্রার্থীদের মাঠ পর্যায়ে প্রচারণা ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন যেখানেই গণসংযোগে যাচ্ছেন সেখানে নেতাকর্মীদের জনস্রোত সৃষ্টি হচ্ছে। একই অবস্থা দেখা গেছে নগরীর কয়েকটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের গণসংযোগেও। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এক প্রার্থী অপর প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেছেন। এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ঘিরে ৪১টি ওয়ার্ডে জেলা প্রশাসনের ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রার্থীদের নির্বাচন আচরণবিধিমালা লঙ্ঘন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। ইতোমধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয় জেলা প্রশাসনের ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্ব দিয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করেছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. সুমনী আক্তার স্বাক্ষরিত আদেশে এই ১৪ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায় চসিকের ১৬, ২০ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ড, আবদুস সামাদ শিকদার ২৭, ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, আশরাফুল হাসান ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড, তৌহিদুল ইসলাম ১২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড, মামনুন আহমেদ অনীক ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড, এস এম আলমগীর ১৪, ১৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড, মিজানুর রহমান ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড, আশরাফুল আলম ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড, মাসুদ রানা ৩৩, ৩৫ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড, সুরাইয়া ইয়াসমিন ২২, ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ড, জিল্লুর রহমান ১১, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড, রেজওয়ানা আফরিন ৯, ১০ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড, উমর ফারুক ২৮, ২৯ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী ৩৯, ৪০ ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা। এবারের চসিক নির্বাচনে ৭ মেয়র প্রার্থীসহ সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলর মিলিয়ে প্রার্থী হয়েছেন ২৩৬ জন।