কক্সবাজার সৈকতে ভেসে গিয়ে পিতা-পুত্রের মৃত্যু

সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে তিন দিনে ৩ পর্যটকসহ ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৩ জুন, ২০২৫ at ১০:০১ পূর্বাহ্ণ

ঈদুল আজহার ছুটিতে কক্সবাজার বেড়াতে এসে আনন্দ মুহূর্তেই বিষাদে পরিণত হয়েছে তিন পর্যটকসহ পাঁচজনের। গত রোববার থেকে মঙ্গলবার এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সাগরে গোসলে নেমে ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যাওয়া পুত্রকে বাঁচাতে গিয়ে পিতাপুত্র দুইজনই মারা যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। তারা হলেন, রাজশাহী সদরের শাহীনুর রহমান (৬০) ও তার ছেলে মোহাম্মদ সিফাত (২০)। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। সমুদ্র সৈকতে কর্মরত সিসেইফ লাইফগার্ডের জ্যেষ্ঠ কর্মী সাইফুল্লাহ সিফাত জানান, পানিতে নেমে গোসল করা অবস্থায় ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যাচ্ছিল পুত্র। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় পিতা। এতে পিতাপুত্র দুজনই ভেসে যায়। খবর পেয়ে লাইফগার্ড কর্মীরা দ্রুত তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করে। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে সহজে তাদের উদ্ধার করা যায়নি। প্রায় ১৫ মিনিট চেষ্টার পর মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে গত রোববার বিকালে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে গোসলে নেমে চট্টগ্রাম শহরের ডিসি রোডের বাসিন্দা রাজীব আহম্মদ (৩৫) নামের এক পর্যটক নিখোঁজ হন। ৮ ঘণ্টা পর মধ্যরাতে সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্টের উত্তরপাশ এলাকায় তার মৃতদেহ ভেসে আসে।

একইদিন রোববার সকালে সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে জাল নিয়ে শখের বশে সাগরে মাছ ধরতে নেমে নিখোঁজ হন কঙবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ নুরু নামের এক ব্যক্তি। সোমবার সকালে বাঁকখালী নদীর মোহনা সংলগ্ন নাজিরারটেক পয়েন্ট সাগরে তার মৃতদেহ ভেসে আসে। পরে লাইফ গার্ড কর্মীরা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে।

সোমবার সকালে বন্ধুদের সাথে ইনানী বিচে ঘুরতে গিয়েছিল রোহিঙ্গা কিশোর শফর আলী (১২)। সমুদ্রে নেমে বন্ধুদের সাথে গোসল করার সময় সাগরের প্রবল স্রোতে ভেসে যায়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দা ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে খোঁজাখুঁজি করেও শফর আলীর কোনো সন্ধান পাননি। পরে পরদিন মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সাগরের উখিয়ার রেজুখালের মোহনায় নিখোঁজ শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়।

কঙবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফি এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভ্রমণকে আনন্দমুখর করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণের পাশপাশি সৈকতের প্রতিটি গোলঘরে পুলিশ অবস্থান করছে। তারপরও অসাবধানতাবশত পাঁচজনের অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৈকতে কেন এই মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধপাচারের অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ জোরদার করা হয়েছে : প্রেস সচিব