কক্সবাজার শহরের সমুদ্র তীরবর্তী সুগন্ধা পয়েন্টের সেই ৫২ অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করলেও অবৈধ দখলদারদের বাধার মুখে তারা শেষ মুহূর্তে পিছু হটে। মালামাল সরানোর জন্য স্থাপনা মালিকদের আগামীকাল শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়।
কক্সবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার মোক্তার বলেন, “উচ্ছেদ কার্যক্রমে চরমভাবে বাধা দিতে চেষ্টা করে অবৈধ দখলদাররা। ভাড়া করা লোকজন নিয়ে এসে অবৈধ দখলদার ও দোকান মালিকরা সেখানে অবস্থান করে এবং প্রশাসনের উচ্ছেদ দলের মুখোমুখি হয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। অন্যদিকে তারা মালামালও সরায়নি। আজ বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে মালামাল সরিয়ে ফেলতে দোকান সমিতি মুচলেকা দিয়েছে। তাই অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে নির্দেশ মতে, আগামীকাল সকাল ১০টায় অভিযান শুরু হবে।”
তিনি আরো জানান, দুপুর ১২টার দিকে সুগন্ধা পয়েন্টে অবৈধ দোকান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উচ্ছেদের আগে দোকানদারদের ঘণ্টাখানেক সময় দেওয়া হয়েছে যাতে তারা নিজেদের মূল্যবান মালামাল সরিয়ে নিতে পারে। এ বিষয়ে সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংও করা হয়।
সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের সেই আলোচিত ৫২ জনের স্থাপনা উচ্ছেদে হাইকোর্টের দেওয়া রুল ও স্থগিতাদেশ গত ১ অক্টোবর খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ এ রায় দেয়।
ফলে ঐ ৫২ ব্যক্তির স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো বাধা না থাকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে সুগন্ধা পয়েন্টের এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, “উচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়ের প্রেক্ষিতে সুগন্ধা পয়েন্টের সেই ৫২ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের প্রক্রিয়া বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। তবে সেই অবৈধ স্থাপনার মালিকরা স্বউদ্যোগে মালামাল সরানোর জন্য সময় চাওয়ায় শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তাদের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এরপরও তারা স্থাপনা না সরালে তা গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।”
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব আবু জাফর সাদেক বলেন, “পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা পরিচালনা করে আসায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল তাদের উচ্ছেদের নোটিশ দেয়। পরে জসিম উদ্দিনসহ ৫২ জন একটি রিট আবেদন দায়ের করেন। একই বছরের ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেয়। এর বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। গত ১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ শুনানি শেষে হাইকোর্টের রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে রায় দেয়।”