কক্সবাজার শহরে বাঁকখালী নদীর তীর দখলের অভিযোগ

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সা. সম্পাদকসহ ১৬ জনের নামে মামলা

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৬ জুন, ২০২২ at ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার শহরে বাঁকখালী নদীর তীর দখলের ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ জয় ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। মামলায় আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম বাদী হয়ে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ১৫ (১) এর ২ ও ৮ ধারায় সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস জানিয়েছেন, প্যারাবন কর্তন এবং জলাশয় ভরাট করে দখল আর স্থাপনা নির্মাণের অপরাধে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলাটি চট্টগ্রামের পরিবেশ আদালতে ন্যস্ত করার আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। মামলাটি আইনানুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তরই তদন্ত করবে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ চক্রটি গত ৫ মাস ধরে বাঁকখালী নদীর প্যারাবন কেটে জায়গা দখল করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
মামলার আসামীরা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান (৩৫), মহেশখালী উপজেলার চরপাড়ার মৃত জালাল আহমদের ছেলে মো. ইফছুপ (৪২), মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমের মৌলভী কবির আহমদের ছেলে রুকন উদ্দিন (৪০), নেত্রকোনা জেলার মরাদিঘি এলাকার ইদ্দিকুল রহমানের ছেলে ওমর ফারুক (৩৬), কঙবাজার শহরের নুর পাড়ার মুবিনুল ইসলামের ছেলে তায়েফ আহমেদ (২৮) ও তার ভাই তাইসাদ সাব্বির (৩০), গাড়ির মাঠ এলাকার জনৈক টিপু (৩৩), ইকরা রিয়েল এস্টেট হাউজিংয়ের স্বত্বাধিকারী আমিনুল ইসলাম আমান (৪০), কঙবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের মনুপাড়ার মোহাম্মদ সেলিম ওরফে বর্মাইয়া সেলিম (৪০), কঙবাজার সদর থানার পেছন রোডের নুরুল ইসলামের ছেলে জিশান উদ্দিন (৩৫) এবং একই এলাকার হোটেল তাজশেবার মৃত হাজী জমির হোসেনের ছেলে মাহবুবর রহমান (৩৮), রুমালিয়াছড়ার আব্দুল মোনাফের ছেলে মো. ইসমাঈল (৩৫), মধ্যম বাহারছড়ার শেখ জসিমের ছেলে মোহাম্মদ রানা (৩৪), লালদিঘি পাড় এলাকার মুফিজুল ইসলামের মেয়ে ঝুমা (৪২), মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুরের মো. নাসিমের ছেলে ইকবাল হাসান (৩৫)। মামলায় আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, শহরের কস্তুুরাঘাট ও নুনিয়ারছড়া এলাকায় বাঁকখালী নদীর তীরে ৬শ’ হেক্টর প্যারাবন রয়েছে। এ প্যারাবনে রয়েছে ২০৫ প্রজাতির পাখ-পাখালি ও জলজপ্রাণীর আবাসস্থল। প্রায় দুই দশক আগে ওয়েস্কা ইন্টারন্যাশনাল নামের জাপানের একটি পরিবেশবাদী সংগঠন এই এলাকায় এ প্যারাবন সৃজন করে। কিন্তু প্রভাবশালী একটি চক্র গত তিনমাসে এ নদীর প্রায় ৬০ হেক্টর প্যারাবন উজাড় করে জমি দখল এবং সেখানে নানা স্থাপনা গড়ে তুলে। এ ঘটনাটি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে প্রশাসনের টনক নড়ে।
এদিকে প্যারাবন উড়াজ ও জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়। তিনি দাবি করেন, বাঁকখালী নদীর তীরে তার বা তার কোনো আত্মীয় স্বজনের নামে কোনো জমি নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ভারী বর্ষণের আভাস
পরবর্তী নিবন্ধখতিয়ে দেখা হচ্ছে জিএমপির সুবিধা-অসুবিধা