কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন, যেখানে টিকিট কাউন্টার, অভ্যর্থনা কক্ষ, লকার, শপিংমল, রেস্তোঁরা, তারকামানের হোটেল, মসজিদ ও চলন্ত সিঁড়িসহ থাকছে বিশ্বমানের সুযোগ–সুবিধা। কিন্তু দোহাজারী–কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের ৯ মাস পার হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি আইকনিক স্টেশনের এসব সুযোগ–সুবিধা। এখন শুধুমাত্র আইকনিক স্টেশন ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে টিকিট কাউন্টার চালু করে কোনো রকম যাত্রীদের মাঝে চলছে টিকিট বিক্রি কার্যক্রম। ইতিমধ্যে কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রেল ভবনে।
এদিকে দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি মাসের (সেপ্টেম্বর) ৩০ তারিখ। দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে দোহাজারী–কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। রামু থেকে টেকনাফের ঘুমধুম পর্যন্ত অবশিষ্ট ২৪ কিলোমিটার রেলপথ মিয়ানমারের আপত্তির কারণে নির্মাণ করা হয়নি। এটি নির্মাণের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এর মধ্যে ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বাংলাদেশের প্রথম আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন বিল্ডিংয়ের নির্মাণ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। আইকনিক রেলস্টেশন ভবনের ভেতরে ও বাইরে এখনও কাজ চলছে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) সঙ্গে যৌথভাবে স্টেশন ভবনটি তৈরি করেছে বাংলাদেশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। নির্মাণ কাজ শেষ হতে আরো এক মাস লাগবে বলে জানান রেলওয়ের বহুল প্রতীক্ষিত এ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. সুবক্তগীন। তিনি গতকাল আজাদীকে বলেন, দোহাজারী–কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের কাজ শেষ হতে আরো এক মাস লাগবে। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক–দুই মাস বাড়তে পারে।
দোহাজারী–কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্পের (আইকনিক স্টেশন বিল্ডিং) ম্যানেজার মো. আব্দুল জাবের মিলন বলেন, আইকনিক স্টেশন ভবনের নিচতলা অনেক আগেই হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক কার্যক্রমগুলো চলমান রয়েছে। আর বাকি ২ থেকে ৬ তলার কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন শেষ মুহূর্তের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। আইকনিক স্টেশনের পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হলে বাংলাদেশ রেলওয়ে তৃতীয় পক্ষকে হস্তান্তর করে স্টেশনের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু করবে বলে জানিয়েছে নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান।
দোহাজারী–কক্সবাজার রেলপথটি ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয়। আর পর্যটন নগরীর কক্সবাজারে প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয় ১ ডিসেম্বর থেকে। বর্তমানে এই রুটে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন এবং একটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করছে। দোহাজারী–কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পে সারাদেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল পাঁচ তারকা হোটেল সুবিধাসহ পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বাংলাদেশের প্রথম আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে চললেও এখনো শেষ করতে পারেনি আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের কাজ।