দখল হয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সৈকতের বালিয়াড়ি, গড়ে উঠছে অবৈধ দোকানপাট। ইতোমধ্যে সৈকতের প্রায় ৩০ একর বালিয়াড়ি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে ৪০টি দোকান। প্রশাসনিক শিথিলতার সুযোগে গত দুই মাসাধিককাল ধরে এই জবর দখল প্রক্রিয়া চললেও সম্প্রতি প্রশাসনের উদ্যোগে কয়েকটি দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরপর আবারও শুরু হয়েছে জবর দখল। স্থানীয় সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দর সংলগ্ন নাজিরারটেক শুঁটকি মহালের পশ্চিম পাশে অবস্থিত সৈকতের বালিয়াড়ি দখলের ঘটনা নতুন নয়। তবে বিগত সরকারের শেষ দিক থেকে এ জবর দখল প্রক্রিয়া আরো জোরদার হয়েছে এবং যেটি এখনও অব্যাহত আছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল করিম জানান, ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল কাদের ও মহেশখালীর কয়েকজন দখলবাজ জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নতুন করে এই দখল কার্যক্রম শুরু করেছে। এর আগে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিক উল্লাহ কোম্পানীর নেতৃত্বে সৈকতের প্রায় ১শ একর জমি জবর দখল করা হয়। জাহাঙ্গীর নামে স্থানীয় এক জেলে জানান, গত কয়েক বছর আগেও এ জায়গায় জাল বোনা হতো, ট্রলার থেকে মাছ উঠা–নামা হতো, পর্যটকদের আনাগোনা হতো। অথচ এখন জায়গাটি দখলবাজদের কবলে। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলে এক সময় পুরো সৈকতই হারিয়ে যাবে। পর্যটকরা আসবে না। তবে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লিয়াকত মিয়া নামের এক বাসিন্দা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবৈধভাবে দখল করেছে তাদের দলের নেতাকর্মীরা। অন্তর্র্বর্তী সরকার আসার পর সবার প্রত্যাশা ছিল বালুচর দখলমুক্ত হবে। কিন্তু দখল প্রক্রিয়া আরো দ্বিগুণ হয়েছে। তিনি বলেন, এই জায়গা সরকারের, কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। আমরা আশা করব অবিলম্বে এই বালিয়াড়ি জবর দখলমুক্ত হবে।
নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ বলেন, রাতের অন্ধকারে সৈকত দখল করে দোকানপাট তৈরি করছে প্রভাবশালীরা। এরই মধ্যে নতুন–পুরাতন মিলে প্রায় ৩০ একর খাস জায়গা দখল হয়ে গেছে। এসব জায়গা দখলবাজরা প্লট আকারে বিক্রি করছে। এ নিয়ে দখলবাজদের মধ্যেও চলছে অন্তদ্বন্দ্ব। এই দখলকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনায় (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী বলেন, সম্প্রতি সৈকত দখলের খবর পেয়ে প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে কয়েকটি অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে অভিযান চলাকালে ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, বাকি অবৈধ স্থাপনাগুলোও দ্রুত সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।