কক্সবাজারের কলাতলীতে পাহাড় কাটা বন্ধে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ও তিন সচিবসহ ৯ জনকে গতকাল মঙ্গলবার লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। এতে পাহাড়ের মাটি দ্বারা জলাধার ভরাটের সকল কার্যক্রম বন্ধ ও ইতোমধ্যে ভরাটকৃত জলাশয় পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়।
এছাড়া কলাতলীতে পাহাড়ের যে পরিমাণ কাটা হয়েছে সেখানে দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষরোপণ এবং রিটেইনিং ওয়াল স্থাপনের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়। কক্সবাজার জেলার সর্বশেষ বিদ্যমান পাহাড়গুলোকে আরো ক্ষতি, ধ্বংস ও কর্তন থেকে রক্ষার জন্য সকল প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পাহাড় কাটা বিষয়ে আদালতের যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা প্রতিটি পাহাড়ে প্রদর্শন করতে বলা হয়।
যাদের নোটিশ দেওয়া হয় তারা হচ্ছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ও কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক। বেলার চট্টগ্রাম অফিস সমন্বয়কারী মনিরা পারভীন রুবা নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আজাদীতে ‘পাহাড় কেটে জলাধার ভরাট করছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি নজরে আসার পর গতকাল সংশ্লিষ্টদের নোটিশ দিল বেলা।
বেলার নোটিশে বলা হয়, কউক চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে বলা হয়, পাহাড় কাটা ও জলাধার ভরাট দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থি ও আদালতের আদেশের স্পষ্ট লক্সঘন। বেলা আদালতের আদেশ যথাযথ প্রতিপালনে কউকের প্রতি কলাতলী এলাকায় পাহাড় কাটা বন্ধের দাবি জানায়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলাসমূহে অবস্থিত সকল পাহাড় কর্তন বন্ধে ২০১১ সালে বেলা একটি জনস্বার্থমূলক মামলা (নং ৭৬১৬/২০১১) দায়ের করে। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত ২০১২ সালের ১৯ মার্চ সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতে অবস্থিত সকল পাহাড় কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করে। একইসাথে আদালত উল্লেখিত এলাকায় পাহাড় কেটে কোনো আবাসন প্রকল্প বা ইটভাটা স্থাপন করা হয়ে থাকলে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ প্রদান করে। সেইসাথে বন উজাড় বন্ধ করতে এবং পাহাড়ি অঞ্চলে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের আধার ত্বরান্বিত রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়।












