পদত্যাগের পর শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবরে কঙবাজারে পথে পথে বিজয় উল্লাস করেছে মানুষ। গতকাল সোমবার বেলা ৩টা থেকে শহরজুড়ে ছাত্র–জনতার ঢল নামে। এ সময় তাদের সাথে বিজয় মিছিলে যোগ দেয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। মিছিলে সবার হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে রাজপথ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুপুর আড়াইটার পর শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাসটার্মিনাল, লিংকরোড, কালুর দোকান, বার্মিজ মার্কেট, বাজার ঘাটা, ফজল মার্কেট চত্বর, লালদিঘির পাড়, শহীদ স্মরণী মোড়, কলাতলী ডলফিল চত্বর ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে খন্ড খন্ড মিছিল আসতে শুরু করে। বেলা গড়াতেই পুরো শহর জনসমুদ্রে রূপ নেয়। বিভিন্ন যানবাহনে মাইক বেঁধে ‘ঈদ মোবারক’ ‘ঈদ মোবারক’ বলে উল্লাস করা হয়। এ সময় খুশিতে মিছিল ও জমায়েতে মিষ্টি, চকলেট ও পানি বিতরণ করেন অনেকেই।
বিকাল ৫টার দিকে সদর মডেল থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় সেখানকার মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করা হয়। এছাড়া কয়েকটি আবাসিক হোটেল ও সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতেও হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনেকেই মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করেন। রাত ৮টা পর্যন্ত পথে পথে মানুষের জমায়েত ও মিছিল দেখা যায়।
কঙবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আল মাহমুদ বলেন, আন্দোলনে অনেক মেধাবীদের প্রাণ দিতে হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকেই। তাই এই বিজয় ছাত্র–জনতার। টেকপাড়ার বাসিন্দা রেজাউর রহমান রাজিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মানুষকে বেশি নির্যাতন করেছে। ছিনিয়ে নিয়েছে বাকস্বাধীনতা। তাই প্রকৃতিই তাদের বিচার করলো। কলাতলীর বাসিন্দা আবদুস সাত্তার বলেন, গত ১৬ বছর ধরে আমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্যাতিত। মামলায় জর্জরিত আমার বন্ধু–বান্ধব সবাই। নির্যাতিত মানুষের দীর্ঘঃশ্বাস পড়েছে শেখ হাসিনার প্রতি।