বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের একটি কটূক্তিমূলক ভিডিও পোস্টকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে থানা ঘেরাও করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। একই সাথে অভিযুক্ত জয়ের মালিকানাধীন মার্কেটও বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। এঘটনায় কক্সবাজার শহরজুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এর অংশ হিসেবে গণজমায়েতসহ ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে একটি কটূক্তিমূলক ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন ইশতিয়াক আহমেদ জয়। এই ভিডিওটি নজরে এলে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এর পরপরই রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী কক্সাবাজার সদর মডেল থানা ঘেরাও করে। এসময় তারা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে অভিযুক্ত ইশতিয়াক আহমেদ জয়সহ গণ–আন্দোলনের মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানান। বিভিন্ন ধরনের জ্বালাময়ী স্লোগান দিয়ে বুধবার ভোররাত ৩টা পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ করেন। পরে থানার ওসি মো. ইলিয়াছ খান আশ্বস্ত করলে সরে যায় শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের মালিকানাধীন থানা সড়কের মোড়ে অবস্থিত ইভান প্লাজা মার্কেটটি তালাবদ্ধ করে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতে ওই মার্কেটে অবস্থিত বহু প্রিন্টের দোকান, একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও একটি বড় রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকে। মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন তদবির করেও বুধবার রাত পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে পারেনি।
এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক রবিউল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারে গণ–আন্দোলনে দু’জন শিক্ষার্থী হত্যা ও শিক্ষার্থীদের উপর একাধিক হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ উল্লেখ্যযোগ্য কোনো আসামিকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি। এই সুযোগ নিয়ে শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে এআই দিয়ে বানানো কটূক্তিমূলক ভিডিও পোস্ট করার মতো ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।’
আরেক সমন্বয়ক সাহিদুল ওয়াহিদ সাহেদ বলেন, ‘আসামি গ্রেফতারে ওসির আশ্বস্ততা পেয়ে আমরা থানা ঘেরাও সমাপ্ত করেছিলাম। কিন্তু কথা মতো কোনো আসামি গ্রেফতার করা হয়নি। তাই আমরা ধারাবাহিক প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের মার্কেট বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানান এই সমন্বয়ক।
অভিযোগের ব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াছ খান বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন আসামি গ্রেফতারও হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।