কক্সবাজারে ঢিলেঢালা হরতাল

তিন জাহাজে ৯শ পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণে

কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোমবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ at ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারে বিএনপির ডাকা সকালসন্ধ্যা হরতাল ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। সকাল দশটার পর থেকে কক্সবাজার শহরে রিকশা, ইজিবাইক এবং ছোট খাটো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। সরকারি অফিসআদালত, ব্যাংকবীমাও যথারীতি খোলা ছিল। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও মাইক্রোবাস ও সিএনজিতে করে মানুষ শহর থেকে উপজেলায় যাতায়াত করেছে। বড় যান চলাচল ছিল কিছুটা কম, তাই ভাড়াও ছিল কিছুটা বেশি।

রোববার ভোরে শহরের বাইপাস রোড, লিংক রোড, আলীর জাঁহাল ও হলিডে মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিংয়ের চেষ্টা করলেও পুলিশের তৎপরতায় রাস্তায় দাঁড়াতে পারেনি বিএনপিজামায়াত কর্মীরা। হরতালের সমর্থনে কক্সবাজারচট্টগ্রাম ও টেকনাফ মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে ও ঝটিকা মিছিল করেছে হরতাল সমর্থকেরা। তবে আইনশৃংখলা বাহিনীর টহল জোরদার থাকায় সড়ক মহাসড়কে হরতালের সমর্থনে কোনো পিকেটিং করতে দেখা যায়নি। সকাল থেকেই জেলা বিএনপি কার্যালয়ে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে দেখা গেলেও বাইরে ছিল পুলিশ মোতায়েন।বিএনপি নেতারা বলছেন, কক্সবাজারের মানুষ হরতালে সমর্থন দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছে। পুলিশও তাদের সহযোগিতা করছে বলে দাবি করেন তারা।

অপরদিকে কক্সবাজার শহরে সকালে হরতাল বিরোধী মিছিল এবং শান্তি সমাবেশ করেছে পৌর আওয়ামী লীগ। বেলা ১১ টার দিকে লালদীঘি পাড় থেকে মিছিলটি বের করা হয় এবং শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এক শান্তি সমাবেশে মিলিত হয়। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বক্তারা পর্যটন শহরে বিএনপির ডাকা হরতাল নাশকতা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।

হরতালের কারণে শনিবারই হুড়োহুড়ি করে কক্সবাজার ত্যাগ করেন হাজার হাজার পর্যটক। তবে রোববার টেকনাফসেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলকারী ৩টি পর্যটকবাহী জাহাজে করে প্রায় ৯শ পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করেন বলে জানান সিক্রুজ ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।

চকরিয়া প্রতিনিধি জানান, চকরিয়ায় বিএনপিজামায়াতের ডাকা হরতালের তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি সারাদিন। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও স্থানীয় যানবাহনের আধিক্য ছিল মহাসড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে। খোলা ছিল ব্যাংক ও অফিসপাড়াও।

সরজমিন দেখা গেছে, অফিসআদালত খোলা থাকায় ভোর থেকে যাতায়াত করতে দেখা যায় চাকুরীজীবীদের। দূরপাল্লার গাড়ি না থাকায় মিনিবাস, মাইক্রোবাস, অটো রিকশাসহ লোকাল পরিবহনে যাতায়াত করতে দেখা যায় যাত্রীসাধারণকে। সকাল থেকেই যথারীতি পৌর শহরের দোকানপাট, ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করে। স্কুলকলেজগামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেছে নির্বিঘ্নে।

চকরিয়া পৌরশহর চিরিঙ্গার ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, হরতালের কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না চকরিয়ায়। অনেকবছর ধরে দেশে হরতাল নেই। তাই মানুষ এখন হরতালকে আমলে নেয় না।

এদিকে সকাল থেকে মহাসড়কের কোথাও বিএনপিজামায়াতের কোন নেতাকর্মীকে মাঠে নামতে দেখা যায়নি। বিপরীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে পৌরসভা ও ইউনিয়ন থেকে খণ্ডখণ্ড মিছিল সহকারে থানা রাস্তার মাথায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দেয়।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, হরতালকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও যানমালের কোনো ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহরতালে চবির ১৯ পরীক্ষা স্থগিত
পরবর্তী নিবন্ধসাইফ পাওয়ারের ব্যাপক ক্ষতি