কক্সবাজারের নাজিরারটেকে ট্রলারে ১০ লাশ উদ্ধার পরবর্তী ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া গেছে নানা তথ্য। এসব তথ্যের বিশ্লেষণের পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যাযজ্ঞের ‘আসল রহস্য উদঘাটনের’ দাবি করেছে পুলিশ।
প্রায় সাড়ে চার মাস আগে সমুদ্রে সংগঠিত এই হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন সময় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস জানিয়েছেন। এ ঘটনায় সর্বশেষ আরেক ‘দস্যু সর্দার’ খায়রুল বশর সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, ট্রলারে ১০ মরদেহ উদ্ধারের মামলার পুরো ঘটনা পুলিশের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। সুমনসহ গ্রেপ্তার নয়জনের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১২–১৩ জনের একটি দল নিহত সামশুল আলম ওরফে সামশু মাঝি ও নিহত নুরুল কবিরের নেতৃত্বে সাগরে গিয়েছিল ডাকাতি করতে। যার জের ধরে ক্ষুব্ধ জেলেরা তাদের পিটিয়ে হত্যা করে। অন্তত ৬০ জেলে এ হামলায় অংশ নেয়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় অংশ নেওয়া ২৫ জনের নাম–পরিচয় পাওয়া গেছে। এসব ঠিকানা যাচাই–বাছাই এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ডাকাতদের হামলার শিকার মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকার ফিশিং ট্রলারের মালিক আনোয়ার কামালকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা গেলে ঘটনাটি আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা আরেকটি ট্রলারকে টেনে নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। ওই ট্রলারটির হিমঘরে হাত–পা বাঁধা ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল নামবিহীন ওই ট্রলারটির মালিক নিহত সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে কঙবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার নয়জনের মধ্যে সাতজন নিজেদের জড়িয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চারদিনের রিমান্ড শেষে সুমন গতকাল সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।