কক্সবাজার শহর থেকে মো. আবু সাঈদ (২০) নামের এক টমটম (ই-বাইক) চালককে অপহরণ করার পর দুর্বৃত্তরা তার স্বজনদের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে।
গত রবিবার (৭ মার্চ) রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার শহর থেকে ঐ টমটম চালককে অপহরণ করা হয় কিন্তু মুক্তিপণের টাকা যোগাড় করতে না পারায় অপহরণের ৫ দিন পরও তাকে উদ্ধার করা যায়নি বলে জানান অপহৃত টমটম চালকের স্বজনরা।
অপহৃত টমটম চালক মো. আবু সাঈদ চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ফুলছড়ি শিয়াপাড়ার আবদুল খালেকের ছেলে।
অপহৃত যুবকের চাচা রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত ৭ মার্চ রাত নয়টার সময় আবু সাঈদকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে তার পিতা আবদুল খালেকের মোবাইল ফোনে ০১৫৭৫৬৮৩৩৭৫ নম্বর থেকে কল দিয়ে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে।”
তিনি বলেন, “ঘটনার বিষয়ে চকরিয়া থানায় অভিযোগ করতে গেলে সদর থানা দেখিয়ে দেয়া হয়। এরপর সদরে গেলে চকরিয়া থানার কথা বলা হয়। তবে মুক্তিপণ দাবি করা মোবাইল ফোন নম্বরটি নোট করেছেন ওসি।”
এ বিষয়ে কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, “লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সঠিক তথ্য অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
উল্লেখ্য, গত পক্ষকালে কক্সবাজার ও কক্সবাজার সন্নিহিত পার্বত্য এলাকা থেকে অন্তত ১০ ব্যক্তি অপহরণের শিকার হয়েছেন যাদের বেশিরভাগই অপরাধীদের মুক্তিপণ দিয়েই ফিরে এসেছেন। সর্বশেষ গত বুধবার উদ্ধার হয়েছে শিশু ও কলেজ ছাত্রসহ আরো ২ জন।
তাদের মধ্যে গত ৮ মার্চ কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে অপহৃত হয় ৭ বছর বয়সী শিশু শাহিনা আক্তার আঁখি।
তাকে বুধবার (১০ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জাদিমুড়া ২৭নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে উদ্ধার করে ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
অন্যদিকে, কক্সবাজারের ঈদগাঁও-রামু সড়কের পানেরছড়া থেকে ঢালা থেকে অপহৃত কলেজ ছাত্র মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে মুক্তিপণের বিনিময়ে উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে বোনের বিয়ে অনুষ্ঠানের কেনাকাটার উদ্দেশ্যে রামুর ঈদগড় থেকে ছোট ভাইকে নিয়ে সদরের ঈদগাঁও বাজারের দিকে আসার পথে পানের ছড়া ঢালা থেকে অপহৃত হয় আবদুল্লাহ। পরে তাকে গহীন অরণ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহরণের পর ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।
এর আগে চকরিয়া থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী নুরুল আবছারকে (৩৫) অপহরণের ৫ দিন পর গত ৭ মার্চ নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে মুক্তিপণ দিয়ে উদ্ধার করা হয়।
এর কয়েকদিন আগে রামুতে অপহৃত আরো ৫ জনকে মুক্তিপণ দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে কক্সবাজারে অপহরণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলাজুড়ে অপহরণ আতংক তৈরি হয়েছে।