কক্সবাজারে অফিস-আদালত হাটবাজারে ভিড় আর ভিড়

লকডাউনের আগের দিন

কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোমবার , ৫ এপ্রিল, ২০২১ at ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ

এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশের মত লকডাউনে যাচ্ছে কঙবাজারও। আর এ জন্য গতকাল রোববার হাটবাজার-রাস্তাঘাট-ব্যাংক-বীমাসহ অফিস আদালতে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। কোথাও ছিল না স্বাস্থ্যবিধির বালাই। যেন সবার আগে নিজের কাজটা সারতে পারলেই হল।
গতকাল রোববার কঙবাজার শহরের কালুর দোকান, বড় বাজার, বাহারছড়া বাজার, কলাতলী ও বার্মিজ মাকেটে দেখা গেছে, লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। সবখানে মানুষ গিজগিজ করছে। কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। বাজারে হঠাৎ করে চাপ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও ভোগ্যপণ্যের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
কঙবাজারের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও গতকাল প্রচণ্ড ভিড় ছিল। দুপুর ১২টায় কঙবাজার সোনালী ব্যাংকের আঞ্চলিক শাখায় গিয়ে দেখা যায়, টাকা তুলতে বুথের সামনে দীর্ঘ লাইন। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা দূরে থাক, অনেকের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি। সেখানে লাইনে দাঁড়ানো সরকারি অফিসের এক কমচারী রফিক জানান, তিনি সকাল ১০টায় লাইনে দাঁড়িয়ে দেড় ঘণ্টা পর টাকা তুলতে পেরেছেন। একই অবস্থা রাস্তাঘাট ও যানবাহনেও। গতকাল বিকাল থেকে যানবাহনের চাপে শহরের টার্মিনালে ছিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রাফিক জ্যাম। একই অবস্থা ছিল শহরের বাজারঘাটা, লালদীঘিসহ গুরুত্বপূর্ণ জংশনগুলোতে। এই অবস্থায় করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা কঙবাজারের মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। প্রতিদিন জেলা শহর ও উপজেলাগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা আদায় করেও পরিস্থিতি বদলানো যাচ্ছে না। বেশিরভাগ মানুষই নানা বায়নায় মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত শনি ও রোববার জেলাব্যাপী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মাস্ক না পড়ায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় ৩ শতাধিক ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে। গত শনিবার কঙবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে ৪ শ ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৯জনের শরীরে করোনা ধরা পড়ে। এরমধ্যে ৪০জন আক্রান্তই কঙবাজার সদরের। করোনায় জেলায় এ পর্যন্ত রোহিঙ্গাসহ শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হযেছে। এরমধ্যে সদরেই মারা যান ৪৫ জন। করোনা সতর্কতায় জেলা প্রশাসন ১ এপ্রিল থেকে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সৈকতসহ জেলার সকল বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে।
জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ জানান, কঙবাজারে ঝুঁকি বিবেচনায় জেলা প্রশাসন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও জনসচেতনতায় কাজ করে আসছে।
এদিকে জেলার আট উপজেলার উপজেলা নিবাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতিদিন উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজার ও স্টেশনগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রেখেছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আমিন আল পারভেজ জানান, করোনা মোকাবেলায় জেলা সদরের পাশাপাশি উপজেলাগুলোতেও প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালতের পাশাপাশি সচেতনতায় কাজ করছেন। আগামীকাল (আজ সোমবার) থেকে সরকারি নির্দেশনা না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কঙবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া বলেন, গরম বাড়ার সাথে সাথে করোনাও দ্রুত বাড়ছে। এ মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর জোর না দিলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছত্তিশগড়ে মাওবাদী হামলায় ২২ জওয়ান নিহত
পরবর্তী নিবন্ধলোকশিল্পী বিনয়বাঁশী জলদাসের মৃত্যুবার্ষিকী আজ