দেশের পর্যটন নগরী কক্সবাজারের অন্যতম ঐতিহ্য হচ্ছে বিশেষ ধরনের সাম্পান। দেশি বিদেী পর্যটকদের কাছে এই সাম্পানের কদর অন্যরকম। চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চল এবং কক্সবাজার জেলায় সাম্পান এখনো ঐতিহ্য হিসেবে টিকে আছে। এবার সে সাম্পানে চড়ল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি–মার্চে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এবারের আসর। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই টুর্নামেন্টের সুদৃশ্য ট্রফিটা বেরিয়েছে বিশ্ব ভ্রমণে। যার অংশ হিসেবে ট্রফিটা এখন রয়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান বোটের সাথে এবার ‘ছবিও তুললো‘ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। গতকাল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রদর্শন করা হয়েছে ট্রফিটি। গতকাল বুধবার সকাল ১০ টায় এর অংশ হিসেবে সাম্পান বোটে ফটোসেশান করা হয়। এরপর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে সীমান্ত সম্মেলনকেন্দ্র উর্মির সামনে সকলের জন্য উন্মুক্ত মঞ্চে প্রদর্শন করা হয় ট্রফি। যেটি বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রদর্শন করা হয়। এটির নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয় র্যাব এবং পুলিশ।
আইসিসির এই ট্রফি দেখতে সৈকতে ভিড় করেন অনেক ক্রিকেটপ্রেমী দর্শনার্থী। তাদের আগমনে সৈকতে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নানান বয়সের মানুষ, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকরা ট্রফি দেখার জন্য ছুটে আসেন। অনেকেই ট্রফির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে জমিয়ে রেখেছেন স্মৃতির পাতায়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পরিচালিত সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্র ‘উর্মি’র সামনে বালুতে ট্রফিটি প্রদর্শনের জন্য তৈরী করা হয় একটি বিশেষ মঞ্চ। সমুদ্রের শীতল বাতাস আর ঢেউয়ের অদ্ভূত মন মাতানো শব্দ মিশে এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করে। অনেকের মতে এই আয়োজন কক্সবাজারের পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই আয়োজনের স্বার্থে কঠোর নিরাপত্তার বলয় ছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব, পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ টিম মোতায়েন ছিল। ট্রফি উন্মোচনের ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের ভিড়ে ‘উর্মি’র সামনের অংশ উৎসবের মঞ্চে পরিণত হলেও এক ঘণ্টা পর ভিড় কমে যায়। তবে ট্রফি দেখতে এবং ছবি তুলতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সবাই। ট্রফি দেখতে এসে অনেকেই উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বলেন একদিন এই ট্রফি আমাদের দেশ জিতবে।
গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় পৌছানো এই ট্রফি আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকবে। আজ ট্রফি নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকায় সেখানে বসুন্ধরা শপিং মলে প্রদর্শন করা হবে। এরপর এই ট্রফি নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। যেখানে বাংলাদেশের সাবেক এবং বর্তমান ক্রিকেটাররা দেখতে পারবেন এই ট্রফি। এদিকে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দিনক্ষণ ঘনিয়ে এলেও এখনো কাটেনি আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা। নির্ধারিত আয়োজক দেশ পাকিস্তানে ভারতের খেলতে যেতে না চাওয়া থেকেই মূলত সব সমস্যার শুরু। এখন পর্যন্ত কাটেনি এই জটিলতা। দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে অচলাবস্থা কবে কাটবে, তাও নিশ্চিত নয়। তবে এসবের মধ্যেও থেমে নেই আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বিশ্বভ্রমণ। বাংলাদেশ ছাড়ার পর ট্রফিটি ১৫ থেকে ২২ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকার কথা। এরপর অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড ঘুরে আগামী ১৫ জানুয়ারি ট্রফি যাবে ভারতে।