কক্সবাজারগামী প্রবালের যাত্রা বাতিল, সন্ধ্যায় স্টেশনে হৈ চৈ

৩ ঘণ্টা অপেক্ষমাণ যাত্রীরা ভাঙচুর করলেন ম্যানেজার ও মাস্টারের রুমে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বাতিল করায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে হৈ চৈ করেছেন যাত্রীরা। এ সময় তাঁরা স্টেশন ম্যানেজার ও স্টেশন মাস্টারের কক্ষের সামনে অবস্থান করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে ট্রেনের বগি ও স্টেশন ম্যানেজার এবং মাস্টারের রুমের সামনে ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা। খবর পেয়ে পুলিশ আসলে যাত্রীরা চলে যান। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় স্টেশনে ম্যানেজার ও মাস্টার কেউই উপস্থিত ছিলেন না।

বেশ কয়েকজন বিক্ষুব্ধ যাত্রী আজাদীকে জানান, আমরা সাড়ে ৩ ঘণ্টা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সে ট্রেনটি কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম স্টেশনে এসে পৌঁছায় বিকেল সাড়ে ৫টায়। ট্রেনটি আসার পর আমরা যাত্রীরা ট্রেনের সিটে উঠে বসার পর সন্ধ্যা ৬টায় স্টেশন থেকে মাইকে প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বাতিলের ঘোষণা দেয়া হয়।

যাত্রীদের অভিযোগ একে তো দেরিতে ট্রেন এসেছে, এরপর আবার যাত্রা বাতিল করা হয়। এই দুই কারণে সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এরপর স্টেশন ম্যানেজার ও মাস্টারের রুমে দেখি তারা কেউই নেই। আমরা যাত্রীরা কারো সাথে এই ব্যাপারে কথা বলে সন্তোষজনক জবাব পাচ্ছি না। তারপর কিছু যাত্রী স্টেশন ম্যানেজার ও মাস্টারের রুমের সামনে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যাত্রীদের বাগ্‌বিতন্ডা হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে আসায় কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এদিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে ট্রেনের যাত্রা বাতিল করার কারণে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। অনেকে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে যাচ্ছিলেন। আবার কক্সবাজারে বেড়াতে যাওয়া যাত্রীরাও রাতে সৈকত এক্সপ্রেস হয়ে চট্টগ্রাম ফেরার কথা ছিল। প্রবাল এক্সপ্রেস না যাওয়ার কারণে সৈকত এক্সপ্রেসও চলবে না। তাঁদের বিকল্প পথে যাতায়াত করতে হবে।

রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিকেল ৩টা ১০মিনিটে কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায় প্রবাল এক্সপ্রেস। শুক্রবার যাত্রার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পৌনে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন বাতিলের ঘোষণা আসে। নির্ধারিত সময়ে ইঞ্জিন না পৌঁছানোয় ট্রেনটি যাত্রা করতে পারেনি বলে জানান রেলের কর্মকর্তারা। তবে যাত্রীদের টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়া হবে বলে জানান তারা। অনিবার্য কারণে ট্রেনের যাত্রাটি বাতিল করতে হয়েছে। এতে অনেক যাত্রী ফিরে গেলেও কিছু যাত্রী বিশৃক্সখলা তৈরি করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বাতিল না করে যদি ট্রেনটি চালাতে হতো তাহলে সেই ট্রেন কক্সবাজার পৌঁছাত রাত ১১টায়। তখন কক্সবাজার স্টেশনে আরেক ঝামেলার পরিস্থিতি তৈরি হতো। এসব বিবেচনায় ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।

এই ব্যাপারে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ না করে প্রতিবারই সংযোগ কেটে দিচ্ছিলেন।

চট্টগ্রাম রেল স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেসের নির্ধারিত আসনের চেয়ে ৩০টি আসন অনলাইনে বেশি বিক্রি করা হয়। সেটা সকালে ট্রেন ছাড়ার আগমুহূর্তে ধরা পড়ে। পরে নতুন করে কোচ লাগাতে হয়। এতে ট্রেন ছাড়তে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিটের মত দেরি হয়। ফলে ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ে সকাল সাড়ে ৭টায়। এই ট্রেন কক্সবাজার থেকে প্রবাল এক্সপ্রেস হয়ে ফিরে আসার কথা ছিল বেলা ২টা ১০ মিনিটে। কিন্তু চট্টগ্রাম ফিরে এসেছে বিকেল সাড়ে ৫টায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমালয়েশিয়া যেতে আগ্রহীদের সতর্ক করল হাইকমিশন
পরবর্তী নিবন্ধশৃঙ্খলাবিরোধী কাজের সাথে যারা জড়িত বিএনপি তাদের পক্ষে নয় : সালাউদ্দিন