আজাদী প্রতিবেদন ম
নগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূলে বাড়ছে অসন্তোষ। সম্মেলন হলেও কাউন্সিলরদের মতামত গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন সম্পন্ন করে দ্বিতীয় অধিবেশনে (কাউন্সিলর অধিবেশন) পুরনোদের রাখার কেন্দ্রীয় নির্দেশনা আছে বলে সান্ত্বনা দিয়ে আসছেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
ইতোমধ্যে নগর আওয়ামী লীগের দুটি সম্মেলনে এমন-ঘটনাই ঘটেছে। শান্তিপূর্ণভাবে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন সম্পন্ন হলেও দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলররা ভোটাভুটি চাইলেও কেন্দ্রীয় নির্দেশনার কথা বলে ভোটাভুটি করেননি মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর বিকালে দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারো আগের সভাপতি কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ চৌধুরী সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু বিপত্তি বাধে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। আগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আলমের বিরুদ্ধে শক্ত তিন প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আলমগীর আলম, আবদুল হালিম এবং শাকিল হারুণ ভোটাভুটির কথা বললেও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ভোটাভুটি না করে আগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আলমকে আবারো সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন। এ দিকে একই ঘটনা ঘটেছে গত ৮ সেপ্টেম্বর নগরীর চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনেও। সম্মেলনে উপস্থিত কাউন্সিলররা ভোটাভুটির মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করার আহ্বান জানালে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সেটা না করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে সভা স্থগিত করে চলে যান। এই নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীসহ কাউন্সিলরদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।
এই ব্যাপারে চকবাজার ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নগর আওয়ামী লীগের এক নেতা আজাদীকে জানান, ওয়ার্ড সম্মেলনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা আছে-আগের পুরনো সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক রেখে কমিটি করতে। চকবাজার ওয়ার্ডে যেটা হয়েছে-সেটা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী হয়েছে।
চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর অধিবেশনে প্রায় ১২৩ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে সভাপতি পদে আগের কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং অর্থ সম্পাদকসহ ৪ জন প্রার্থী এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন।
এই ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার আজাদীকে বলেন, ওয়ার্ড সম্মেলনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের একটি দিক নির্দেশনা আছে, সেটার প্রেক্ষিতে মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছিল-যে ওয়ার্ডে যারাই আছেন-তারাই থাকবেন। ৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডের সম্মেলনেও আগের কমিটি বহাল আছে। কিন্তু চকবাজার ওয়ার্ডে সেটা তারা মানেননি। এ জন্য আমাদের মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রার্থী এবং কাউন্সিলরদের ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে।
এ দিকে চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বাবুল জানান, কাউন্সিলর অধিবেশনে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ আমরা যারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তাদেরকে ৫ মিনিট করে সময় দিয়েছেন সমঝোতার জন্য। সমঝোতা হয়নি। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে ৫জনের মধ্যে এড. নোমান চৌধুরীকে আরো ৩জন সমর্থন জানিয়েছেন। উনারা চাইলে সাধারণ সম্পাদকেরটা ঘোষণা দিয়ে যেতে পারতেন। যেহেতু একজনকে অপর ৩জন সমর্থন করেছেন। কাউন্সিল অধিবেশনে সবাই ভোটাভুটি চেয়েছিলেন। সেটা হলে ভালো হতো। এখন সম্মেলন হল-কমিটি হল না। এতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছেন।
চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নোমান চৌধুরী জানান, সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে আমরা ৫জন প্রার্থী ছিলাম। আমরা ভোটাভুটির চেয়েছিলাম। কিন্তু মহানগর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে আমাদেরকে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলে সভা স্থগিত করে চলে গেছেন।
কাপাসগোলা ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিমুর রহমান বলেন, সম্মেলনে কাউন্সিলররা ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা হয়নি। অনেক বছর পর সম্মেলন হয়। সেখানে কাউন্সিলররা নিজেদের মতামতের ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।











