নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পরিচয় দেন তিনি। নামের পাশে বড় বড় ডিগ্রি এমবিবিএস (ডিএমসি), বিসিএস (স্বাস্থ্য), এফসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (নিউরোলজি) ও এফআরসিপি (লন্ডন) ডিগ্রি লেখা। ভিজিট নেন ৫০০ টাকা। বাস্তবতা হলো মাত্র অষ্টম শ্রেণী পাস করেই তিনি এত ডিগ্রি গলায় ঝুলিয়ে দিব্যি রোগী দেখে চলেছেন।
গত সাত বছর ধরে এ প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মুহাম্মদ খোরশেদ আলম নামের এই ব্যক্তি এর আগে ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই মাগুরা সদরে গ্রামীণ ল্যাব মেডিকেল সার্ভিসেস নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ধরা পড়েছিলেন। এক বছরের জেল হয়েছিল তার। এর আগে কুমিল্লায় এক ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ছয় মাসের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। প্রতিবারই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি ফিরে যান পুরনো পেশায়।
অবশেষে তৃতীয়বারের মতো গতকাল সকালে কাট্টলী মেডিকেল হল থেকে নিউরো মেডিসিনের অভিজ্ঞ (!) চিকিৎসক সেজে বসা খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার হয়। স্বেছাসেবী সংস্থা করোনা মেডিসিন ব্যাংকের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে আকবর শাহ থানা পুলিশ। তিনি পাঁচলাইশের আবদুর রহিমের ছেলে। এ সময় তার কাছ আলামতসহ সরঞ্জাম জব্দ করে পুলিশ।
আকবরশাহ থানার ওসি মো. জহির হোসেন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে আজাদীকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি মানুষের ক্ষতি করে আসছিলেন। তার কাছে পাওয়া ডাক্তারি সরঞ্জামসহ নাম ফলক, ভিজিটিং কার্ড, সিলমোহর জব্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ছদ্মবেশ ধারণের অপরাধে মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণী পাস খোরশেদ আলমের মূল বাড়ি হাটহাজারী। একসময় তিনি ছিলেন ঢাকা মেডিকেলের ওয়ার্ডবয়। ডাক্তার পরিচয় দিতেন পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়া এলাকায়। মাগুরায় ধরা পড়ে এক বছর জেল খেটে বেরুনোর পর খোরশেদ চলে আসেন চট্টগ্রামে। আবারও শুরু করেন চিকিৎসাসেবার নামে প্রতারণা। এবারও ধরা পড়েন।