করোনাভাইরাসের প্রকোপে নারী বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব বাতিল হওয়াটাই যেন আশীর্বাদ হয়ে এলো বাংলাদেশ নারী দলের জন্য। অবসান হলো দীর্ঘ অপেক্ষার। ওয়ানডে বিশ্বকাপের মূল পর্বে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিল সালমা খাতুন, জাহানারা আলমরা। আইসিসি গতকাল শনিবার জিম্বাবুয়েতে চলমান বাছাইয়ের টুর্নামেন্টটি বাতিলের ঘোষণা দেয়। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচ বাতিলের পরপরই এলো এই সিদ্ধান্ত। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত খেলেনি ওয়ানডে বিশ্বকাপের মূল পর্বে। এর আগে দুইবার বাছাইপর্ব খেলে তারা প্রতিবারই পঞ্চম হয়। এবার অবশ্য বেশ ভালো ছন্দে ছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে তাদের জন্য দুয়ারটি সরাসরি খুলে দিল কোভিড-১৯। এবারের বাছাইপর্ব থেকে তিন দল যাওয়ার কথা ছিল মূল পর্বে। এখন পুরো প্রতিযোগিতাই বাতিল হয়ে যাওয়ায় এই দল তিনটি র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে নির্বাচন করেছে আইসিসি।
স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আগেই মূল প্রতিযোগিতায় খেলা নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত। ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে পাঁচ নম্বরে থাকার সুবাদে বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। এছাড়া র্যাঙ্কিংয়ে সপ্তম ও অষ্টম স্থানে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানও থাকছে শিরোপার লড়াইয়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় গত সপ্তাহে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বাড়ছে। জিম্বাবুয়ে ও আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলোতে পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। যার প্রভাবে শনিবার শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার বাছাইয়ের ম্যাচটি বাতিল করে দেওয়া হয়। তখনই শঙ্কা জাগে পুরো টুর্নামেন্ট বাতিল হওয়ার। সেটাই সত্যি হলো।
এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ইউরোপিয়ান দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র আফ্রিকার অঞ্চলগুলোতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। শ্রীলঙ্কা সরকারও জিম্বাবুয়েসহ দক্ষিণ আফ্রিকার ছয়টি দেশে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশও শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। সব মিলিয়ে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই জিম্বাবুয়ে থাকা দলগুলোকে দেশে ফেরত পাঠানোর স্বার্থে টুর্নামেন্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান, আইসিসির হেড অব ইভেন্ট ক্রিস টেটলে।
তিনি বলেন, আসরের বাকি অংশ বাতিল করতে বাধ্য হওয়ায় আমরা অত্যন্ত হতাশ। তবে আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো এত সংক্ষিপ্ত নোটিশে আরোপ করা হয়েছে যে দলগুলোর দেশে ফিরতে না পারার ঝুঁকি তৈরি হতো। আসরটি সম্পন্ন করতে অনেক পথই ভেবেছি আমরা; কিন্তু এখন এটা সম্ভব নয়। আমরা যত দ্রুত সম্ভব জিম্বাবুয়ে থেকে দলগুলোকে ফেরত পাঠাব। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন তাদের র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে ২০২২ সালের আইসিসি নারী বিশ্বকাপে খেলবে। আর শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ড আইসিসি নারী চ্যাম্পিয়নশিপের পরবর্তী চক্রে তাদের সঙ্গে যোগ দেবে।