ওষুধের কাঁচামাল তৈরিতে বাজেটে প্রণোদনা জরুরি

অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৯ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

সাউদার্ন ইউনির্ভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ ওষুধ উৎপাদন এবং রপ্তানি করে আসলেও এখনো সিংহভাগ কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। দেশেও এখন কাঁচামাল তৈরি হচ্ছে। দেশে কাঁচামাল উৎপাদন বাড়ানো গেলে আমদানি কমে আসবে। এজন্য ওষুধের কাঁচামাল তৈরিতে আগামী বাজেটে প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ফার্মেসি বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, গত ৩০ বছর ধরে বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের বিকাশ হয়েছে। ৯০ দশকের পর থেকে ঈর্ষনীয়ভাবে ওষুধ শিল্প বিকশিত হয়েছে। এর আগে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগ ছিল। অন্য ইউনিভার্সিটিগুলোতে ফার্মেসি বিভাগ ছিল না। ৯০ দশকের পর থেকে ফার্মেসি বিভাগ হয়েছে, মানবসম্পদ তৈরি হয়েছে। একইভাবে ওষুধ শিল্পও বিকশিত হয়েছে। এখানে ফার্মেসির অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘আগে দেশিয় চাহিদার কারণে বেশিরভাগ ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। এখন ৯৫ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। জীবনরক্ষাকারী নানান ওষুধসহ বর্তমানে ৪-৫ শতাংশ ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমাদের দেশ থেকে প্রচুর পরিমানে ওষুধ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। সবক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক নানান স্ট্যান্ডার্ড মেনে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এসব ওষুধ রপ্তানি করছে এদেশের উদ্যোক্তারা। এখন আমাদের দেশের ওষুধ শিল্প অনেক এগিয়েছে। আশার কথা হচ্ছে, সরকার ইতোমধ্যে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে।’
অধ্যাপক মহিউদ্দিন বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে বিদেশ থেকে এন্টিভাইরাল অনেক ওষুধ এসেছে। আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোও এসব ওষুধ কয়েক মাসের ব্যবধানে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের দেশের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও আন্তর্জাতিক মানসম্মত। তারাও চেষ্টা করলে কোভিডের মতো ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে। ৩ থেকে ৬ মাসের প্রচেষ্ঠায় ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব। এজন্য বিরাট অংকে সরকারি সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে। মূলত আর্থিক সমস্যার কারণে আমাদের দেশের রিসার্চগুলো দুর্বল। উন্নত দেশগুলো বছরে শত শত কোটি ডলার খরচ করে শুধু রিসার্চের জন্য। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে রিসার্চ বেইজড কাজ শুরু করার জন্য বর্তমান সরকারের ভালো পরিকল্পনাও রয়েছে।’
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দকে পরিকল্পনামাফিক ভাগ করে কিছু অংশে রিসার্চ বেইজড করার পদক্ষেপ নেওয়া হলে ওষুধ শিল্প অনেক সমৃদ্ধ হবে। আমাদের দেশে শুধু যন্ত্রপাতি ও টেকনোলজির অভাব, জনবলের অভাব নেই। আমাদের অনেক মেধাবী সন্তান বিদেশে সুনামের সাথে কাজ করছে। ওষুধ শিল্পের যেভাবে বিকাশ হচ্ছে, সেখানে সরকার পদক্ষেপ নিলে এ শিল্প আরও অনেক এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘ওষুধ শিল্পকে খুবই নগন্য পরিমাণে বন্ডেড সুবিধা দেওয়া হয়। এই সুবিধা বাড়ানো গেলে, কাঁচামাল তৈরিতে বাজেটে প্রণোদনা দেওয়া গেলে কাঁচামাল আমদানিও অনেক কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিনিয়োগের সুদ ৮ শতাংশের মধ্যে রাখা প্রয়োজন
পরবর্তী নিবন্ধওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমাতে হবে