ওরা ক্যান্সার যোদ্ধা, শোনালেন অন্যরকম গল্প

জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়াতে চাই আত্মবিশ্বাস : এম এ মালেক

| শনিবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৫:২১ পূর্বাহ্ণ

জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়াতে চাই আত্মবিশ্বাস : এম এ মালেক

আজাদী প্রতিবেদন

একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, জন্ম এবং মৃত্যুর মাঝখানে পুরো সময়টাই আমাদের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তবে যারা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের অন্যরকম এক যুদ্ধ করতে হয়। আজকের এই সম্মাননা প্রতিটি ক্যান্সার রোগীর জন্য নতুন আশার সঞ্চার করবে। একটি বিষয় খেয়াল করে দেখবেন, ক্যান্সার শব্দটির শুরু হয়েছে ‘ক্যান’ দিয়ে। অর্থাৎ পারি। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চাই আত্মবিশ্বাস। এই আত্মবিশ্বাস থেকে আজ আমরা সমবেত হয়েছি। গতকাল নগরীর নেভি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত ক্যান্সার যোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতাল এবং আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. ভাস্কর চক্রবর্তীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সম্মাননা অনুষ্ঠানে সুস্থ হওয়া ১০০ জন রোগীকে এই সম্মাননা দেয়া হয়।

এম এ মালেক বলেন, আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একটা গল্প আছে। গল্পের পেছনে যা হয়েছে, তা আমরা কখনো পরিবর্তন করতে পারবো না। কিন্তু চাইলে গল্পের আগামীর অংশটা নিজের মতো করে সাজিয়ে তুলতে পারি। এজন্য বেশি কিছুর প্রয়োজন নাই, শুধু দরকার ইচ্ছেশক্তি। আসলে আশা এবং ইচ্ছাই আমাদের জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ক্যান্সার মানে সবকিছু শেষ, এই ধারণা এখন অতীত। আমেরিকার অন্যতম একটি ক্যান্সার হাসপাতালের নাম হচ্ছেসিটি অব হোপ। অর্থাৎ আশার শহর। তাই সবকিছুতে আমাদের আশা করতে হবে। নিরাশ হওয়া যাবে না।

দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক বলেছেন, ক্যান্সার রোগীকে অবহেলা করা যাবে না। তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে হবে। আমাদের যার যার জায়গা থেকে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। অনুষ্ঠানে ক্যান্সার যোদ্ধাদের মেলায় অংশ নিয়েছেন গাজীপুর টঙ্গীর বাসিন্দা ইসলামুল হক ইমতিয়াজ। গত ১৫ বছর ধরে তিনি সুন্দর হাতের লেখার একটি একাডেমি চালাচ্ছিলেন। মাঝপথে ২০২০ সালে ব্রেন ক্যান্সার ধরা পড়ে। ডাক্তারের পরামর্শে তিনি ভারতের চেন্নাইয়ে অপারেশন করেন। দীর্ঘ এক বছর ডা. ভাস্কর চক্রবর্তীর অধীনে চিকিৎসা নিয়ে গত ২০২১ সালে তিনি সুস্থ হন। তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমি যখন ক্যান্সার আক্রান্ত, শুরুতে ভয় পেয়েছিলাম। কারণ ক্যান্সারের কারণে আমার হাতে লিখতে পারছিলাম না। তবে অবশেষে ক্যান্সার জয় করতে পেরেছি, এতেই আমরা ভালো লাগছে।

আরেক ক্যান্সার জয়ী নারী রোকসানা পারভীন পপি। তিনি প্রদর্শিত মেলায় হাতে তৈরি বিভিন্ন নাস্তা বিক্রি করছিলেন। তিনি বলেন, ২০২০ সালে আমি ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হই। চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন করা হয়। ডাক্তাদের সেবায় আজ আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। তবে খাগড়াছড়ির কাজলী ত্রিপুরা এখনো ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে যুদ্ধ করছেন। পেশায় শিক্ষিকা কাজলী জানান, তিনি আগের চেয়ে এখন অনেকটা সুস্থ আছেন। মেলায় তিনি পাহাড়ি বস্ত্র বিক্রি করছেন।

রশীদ উন নবীর সঞ্চালনায় ও ডা. ভাস্কর চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট আবু মো. হাসেম, ইউসিবি পিএলসি ও প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী এম. শাহজাহান ভূঁইয়া, এঙ্মি ব্যাংক লিমিটেড ও যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ লকিয়তউল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইন্দু নন্দন দত্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য, অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ ইফতেখার আহমেদ খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ ভানু রঞ্জন চক্রবর্তী, স্বপ্না চক্রবর্তী, ডা. ফাহিম রহমান, ডা. অনসূয়া ধর ও ব্যাংকার শারমিন আখতার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজহুর হকার্স মার্কেটে দোকানে আগুন
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে হোটেল থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর মৃতদেহ উদ্ধার