ওরাই বাঁচাবে শতবর্ষী গর্জন

মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান রক্ষায় বনবিভাগের সাথে যুক্ত স্থানীয়রাও

চকরিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের অধীন মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের (ন্যাশনাল পার্ক) শতবর্ষী মাদার ট্রি (গর্জন), বন ও গাছ-গাছালি রক্ষায় হিমসিম খাচ্ছে বনবিভাগ। প্রতিনিয়ত পাহাড়খেকো, বনদস্যু ও একশ্রেণির দখলবাজ চক্রের অপতৎপরতার কারণে দিন দিন জাতীয় উদ্যানের পাহাড় সাবাড় করে মাটি গাছপালাসহ লুট করছে। এই পরিস্থিতিতে সেই জাতীয় উদ্যান রক্ষায় বনবিভাগের সাথে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বন রক্ষায় স্থানীয়দের নিয়ে গঠিত সিএমসি (কো ম্যানেজমেন্ট কমিটি) সদস্যরা। বন ধ্বংসের যে কোন ধরণের অপতৎপরতা রোধে বনবিভাগের সাথে তারা (সিএমসি) একাট্টা হয়ে কাজ করবেন বলে ঘোষণা দেন।
গত সোমবার সকালে মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর মেধাকচ্ছপিয়া বনবিট কার্যালয় প্রাঙ্গনে সিএমসি সদস্যদের নিয়ে সভা করেন বনবিভাগের কর্মকর্তারা। এতে নেতৃত্ব দেন ফুলছড়ি রেঞ্জের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদ্য বদলি হওয়া ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আবু জাকারিয়া, বিট কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন, মাষ্টার আবুল হোসেন, সিএমসি নেতা আক্তার কামালসহ কমিটির সকল সদস্য এবং বনজায়গীরদার (ভিলেজার) ও সিপিজি সদস্যরা।
সিএমসি সভাপতি মাষ্টার আবুল হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান হচ্ছে আমাদেরই সম্পদ। এই জাতীয় উদ্যানকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই সিএমসির সকল সদস্য যে যার অবস্থান থেকে বনবিভাগকে সহায়তা করবে উদ্যানের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায়।’
ফুলছড়ি রেঞ্জের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ফাঁসিয়াখালী বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ন্যাশনাল পার্ক তথা মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের সম্পদ নষ্ট করছে প্রভাবশালীরা। পাহাড় সাবাড় থেকে শুরু করে এই উদ্যানের গাছপালার দিকেও লোলুপ দৃষ্টি দিয়েছে পাহাড়খেকো ও বনদস্যুরা। তাই বনজসম্পদ রক্ষায় স্থানীয়দের সমন্বয়ে গঠিত সিএমসি সদস্যদের নিয়ে এই উদ্যানকে রক্ষা করা হবে এবং সিএমসি সদস্যরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বনবিভাগের সাথে।’
উল্লেখ্য, চকরিয়ার খুটাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান। এই উদ্যানটি গগণচুম্বি শতবর্ষী মাদার ট্রি’র (গর্জন) জন্য সুপরিচিত প্রাকৃতিক বন। ২০০৪ সালে উদ্যানটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০৮ সালে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। এই উদ্যানের আয়তন প্রায় ৩৯৫ দশমিক ৯২ হেক্টর। এই উদ্যানে দাঁড়িয়ে রয়েছে শতবর্ষী প্রায় ১০ হাজার মাদার ট্রি (গর্জন)। এই উদ্যানের মাঝখান দিয়ে চলমান চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়ক। কঙবাজারের সমুদ্র দর্শনে যাওয়ার সময় বাসসহ বিভিন্ন পরিবহনে যাত্রাপথে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানের নয়নাভিরাম পরিবেশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার অনুরোধ
পরবর্তী নিবন্ধহৃদরোগে আক্রান্ত সুজাতা হাসপাতালে