চট্টগ্রাম ওয়াসা গ্রাহক পর্যায়ে বিলিং সিস্টেমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে ‘মোবাইল রিডিং অ্যাপস’ চালু করতে যাচ্ছে। গ্রাহক পর্যায়ে এই প্রক্রিয়া শতভাগ বাস্তবায়ন হলে বিলিং প্রক্রিয়ায় (গড় বিল ও সিস্টেম লস) গ্রাহকের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব হবে বলে জানান ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, জাইকার কারিগরি সহায়তায় গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নে বিলিং প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে ‘মোবাইল রিডিং অ্যাপস’ এর মাধ্যমে বিল জারি এবং বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রুমন দে আজাদীকে বলেন, প্রাথমিক ভাবে পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে নগরীর ১৪টি ওয়ার্ডের বেশ কিছু অংশে। এই পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর সুফল পাওয়া গেলে চট্টগ্রাম ওয়াসার ৭৮ হাজার ৫৪২ জন আবাসিক গ্রাহকের সব মিটার এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে ৩ হাজার ডিজিটাল মিটার বসানো হয়েছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই পাইলট প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। অনেক সময় পানির বিল নিয়ে গ্রাহকদের নানান রকম অভিযোগ থাকে। এখন গ্রাহকদের আর কোনো অভিযোগ থাকবে না।
চট্টগ্রাম ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, প্রথমে নগরীর ২২ নম্বর এনায়েত বাজার, ৩১ নম্বর আলকরণ, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর, ২৫ নম্বর রামপুর, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলীর ফয়স লেক, পূর্ব ফিরোজশাহ, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী, ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদ, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম, ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলী, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গী বাজার, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডে এই পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, জাইকার কারিগরি সহায়তায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথমে নগরীর বেশ কিছু ওয়ার্ডের কিছু কিছু অংশে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট মিটার পরির্দশক মোবাইল রিডিং অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহক সংযোগের মিটারের রিডিংয়ের ছবি তুলে অন দ্যা স্পট বিলজারি করে প্রিন্টেড কপি তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহককে প্রদান করবেন। গ্রাহকের মিটার দেখে তাৎক্ষণিকভাবে থার্মার পেপারে প্রিন্টেড বিল প্রদানের কারণে গ্রাহক শতভাগ সঠিক বিলটি পাবেন। গ্রাহকরা সাথে সাথে ঘরে বসে নিজেদের মোবাইল থেকে বিকাশ, নগদ, রকেট, জি পে ইত্যাদির মাধ্যমে বিল পরিশোধ করতে পারবেন। অথবা ওয়াসার তালিকাভুক্ত যে কোনো ব্যাংকে পরিশোধ করতে পারবেন। এর ফলে বিল নিয়ে গ্রাহকদের দীর্ঘদিনের যে অভিযোগ সেই অভিযোগ আর থাকবে না।
চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির বিল নিয়ে গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ডিজিটাল মিটারে বিলিং সিস্টেমে মোবাইল রিডিং অ্যাপস চালু হলে সেটি কমে আসবে। এর মধ্য দিয়ে স্বচ্ছতা আসবে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির বিলিং পদ্ধতিতে। পানির ভূতুড়ে বিলের খড়গ থেকে মুক্ত হবেন চট্টগ্রাম ওয়াসার গ্রাহকরা। পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাবে সিস্টেম লস ও নন রেভিনিউ ওয়াটারের আড়ালে বাইপাস লাইনের মাধ্যমে পানি চুরি।