প্লট মালিকেরাই প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার যোগান দিচ্ছে কর্ণফুলী আবাসিক এলাকার পানি সরবরাহের জন্য। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় চট্টগ্রাম ওয়াসাকে এই অর্থ প্রদান করতে হবে। গতকাল নেয়া এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অবশেষে দীর্ঘ ৩৩ বছরের পানি সংকটসহ বিড়ম্বনার অবসান হচ্ছে কর্ণফুলী আবাসিক এলাকার। কর্ণফুলী আবাসিক এলাকায় পানি সরবরাহের ব্যাপারে গতকাল (মঙ্গলবার) সকালে সিডিএ চেয়ারম্যানের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সভায় উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিডিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনজুর হাসান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, ৩৩ বছরের পুরনো প্রকল্পটি ওয়াসার সুপেয় পানির অভাবে পরিত্যক্ত হয়ে আছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিপুল সংখ্যক নাগরিকের আবাসন সংকট নিরসন হবে এবং সিডিএ এবং ওয়াসা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে। কিন্তু প্রকল্পটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ওয়াসার ‘ভান্ডালজুড়ি’ প্রকল্পের পানি সরবরাহের জন্য ওয়াসার ডিমান্ড নোটের ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৭০ হাজার ৯ শ’ ৩৯ দশমিক চার শূন্য টাকা সিডিএর পক্ষে ওয়াসার ফান্ডে জমা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।’
তিনি এ ব্যাপারে প্লট মালিক সমিতির সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এ সময় প্লট মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সিনিয়র সহ–সভাপতি অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান উক্ত অর্থ প্লট মালিকদের বৃহত্তর কল্যাণে ভূমি অনুপাতে কাঠা প্রতি প্রায় ৫০ হাজার টাকা ছয় মাসের মধ্যে জমা প্রদানের প্রস্তাব করেন। প্লট মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. ইমরান বিন ইউনুস, সহ–সভাপতি গেলাম ওয়ারেছ, সম্পাদক ইয়াসিন চেয়ারম্যান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ ও উপস্থিত প্লট মালিকেরা এই প্রস্তাবে সম্মতি জানান। এ ব্যাপারে সিডিএ এবং মালিক সমিতির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সম্পাদনেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, আবাসিক এলাকাটিতে দ্রুত পানির সংযোগ দেয়ার জন্য সিডিএ উক্ত অর্থ আপাততঃ ওয়াসা কে জমা প্রদান করবে। প্লট মালিকদের কাছ থেকে ছয় মাসের মধ্যে এই অর্থ আদায় করে নেয়া হবে। বৈঠক থেকে ওয়াসার এমডি আনোয়ার পাশার সাথেও যোগাযোগ করা হয়। তিনি ডিমান্ড নোটের টাকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে দ্রুত পানি সংযোগ প্রদানে ওয়াসার সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে জানান।
বৈঠকে উক্ত আবাসিক এলাকার অভ্যন্তরে অবৈধভাবে কোরবানির পশুর হাট বসানোর ফলে রাস্তাঘাট, কালভার্ট ও অবকাঠামোর ক্ষতি সাধন বন্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিডিএও প্লট মালিক সমিতি এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে সিডিএ–র স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট ও সচিব মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াছ, সিডিএ মেম্বার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনজুর হাসান, প্রফেসর ডা. ইমরান–বিন ইউনুস, মোহাম্মদ আনিসুল হক পাটওয়ারী, সিনিয়র এস্টেট অফিসার চৌধুরী মোহাম্মদ আবু হেনা, প্রকৌশলী মোহাম্মদ ওসমান সিকদার, মোহাম্মদ আলমগীর খান, মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান, মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রমূখ ও প্লট মালিকদের মধ্যে অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল হুদা চৌধুরী, সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুজ্জামান চৌধুরী (রাফি), আবদুল মালেক, মোজাফফর আহমেদ, মোহাম্মদ ফজলুল করিম, মোহাম্মদ ফয়সাল আলম, মারুউফা চৌধুরী, মো. শাহ ই আলম, মোহাম্মদ ইকবাল, মোহাম্মদ মোবিনুল হক চৌধুরী, সোয়েব কাশেম চৌধুরী, মোহাম্মদ বজলুল করিম, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, মিআদ বিন কাইউম চৌধুরী, মোঃ ইব্রাহীম, মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।