ওমিক্রনে আক্রান্তের দেহে যেসব উপসর্গ থাকে

| রবিবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২২ at ৭:৩১ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন। যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশে হাসপাতালে ভর্তির হারও বেড়ে চলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, আগের ধরনগুলোর মতো ওমিক্রনের কারণে মানুষ বেশি অসুস্থ হয় না। কিন্তু যেভাবে অনেক বেশি মানুষ এই ধরনে আক্রান্ত হচ্ছে, তাতে অনেকে আইসোলেশনে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ জন ওমিক্রন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন বলে সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ১২৮টি দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতেও এই ধরনের সংক্রমণ বাড়ছে। দুদিন আগে ওখানে ওমিক্রনে শনাক্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।
লক্ষণগুলো কী কী : অনেকের কাছে ওমিক্রন সাধারণ ঠান্ডার মতো মনে হবে। অনেকে বলেছেন, ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের গলা শুকিয়ে যাওয়া, সর্দি লাগা, শরীরের জয়েন্টে ব্যথা বা মাথাব্যথা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাইফুল্লাহ মুনশি বলেন, ওমিক্রনের লক্ষণগুলো খুবই হালকা ধরনের হয়। ডেল্টা বা অন্য ধরনগুলোর মতো অতটা প্রকট নয়। অনেকের ফুসফুসের ওপরের দিকে ব্যথা হতে পারে। সাধারণত সিকোয়েন্সিং করে এটা শনাক্ত করা যায়।
তিনি বলেন, করোনার লক্ষণ দেখা গেলেই যেসব সতর্কতা নেয়ার কথা বরাবর বলা হয়েছে, সবাইকে সেগুলো নিতে হবে। শুধু ওমিক্রনের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেয়ার নেই। এর আগের করোনার ধরনগুলোয় আক্রান্ত হলে স্বাদ বা গন্ধ চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটত। এছাড়া কাশি ও উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর হতো। করোনার ক্ষেত্রে এখনো এই তিনটি প্রধান লক্ষণ। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক তৌফিক আহমেদ বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তে জানা যাচ্ছে, ওমিক্রন একটু হালকা ধরনের। আক্রান্তদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া বা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহামারি বিশেষজ্ঞ ড. আব্দি মাহামুদ বলেন, ওমিক্রন যে অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে কম ক্ষতিকর, সেটি বলার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। মূল বার্তা হলো, আপনি যদি টিকা নিয়ে থাকেন, তাহলেই আপনি নিরাপদ। ২৫০ বেড টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ডেল্টা বা অন্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রন দ্রুত ছড়ায়। কিন্তু এটি ততটা প্রাণঘাতী নয়। বিশ্বব্যাপী দেখা গেছে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও অন্যগুলোর তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার কম।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা গবেষণা করে দেখেছে, ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও বুস্টার ডোজ নিলে ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ঠেকানো যায়।
ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ওমিক্রন নাকি ডেল্টায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেটা নিয়ে চিন্তা করার চেয়ে করোনাভাইরাসে যাতে আক্রান্ত না হন, সেই চেষ্টা করতে হবে। সেজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আর কোনোভাবে আক্রান্ত হলে আইসোলেশনসহ চিকিৎসার যেসব পদ্ধতি আছে, সেগুলোই অনুসরণ করতে হবে।
এদিকে, করোনার অন্য ধরনগুলোয় লক্ষণ প্রকাশে অনেক সময় সাতদিন সময় লাগলেও এক্ষেত্রে সাধারণত তিন দিনের ভেতর লক্ষণ প্রকাশ হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরীতে নগদ টাকাসহ ১৪ জুয়াড়ি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধপটিয়ায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে যানজট, দুর্ভোগ