ওমরাহ ভিসা প্রায় বন্ধ, অনিশ্চয়তায় চট্টগ্রামের ২০ হাজার মানুষ

টিকেট ও বাড়ি ভাড়ার টাকা ফেরত পাওয়া যাবে? এজেন্সিগুলোও সমস্যায়

হাসান আকবর | রবিবার , ১৬ মার্চ, ২০২৫ at ৪:১৩ পূর্বাহ্ণ

সৌদি আরব হঠাৎ করে ওমরাহ ভিসা প্রায় বন্ধ করে দেওয়ায় হাজার হাজার মানুষ বেকায়দায় পড়েছেন। সবকিছু গোছগাছ করে পবিত্র রমজানে ভিসার অভাবে ওমরাহ করতে যেতে পারছেন না অনেক মানুষ। বিভিন্ন এজেন্সি পড়েছে আরো বড় সংকটে। মানুষের কাছ থেকে টাকা, এমনকি বিমানের টিকেট করে ফেললেও এখন ভিসা না জুটায় সবকিছু ভণ্ডুল হয়ে যাচ্ছে। ওমরাহ ভিসা বন্ধ করে দেওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

জানা যায়, রমজানে বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ সৌদি আরব যাতায়াত করেন। ওমরাহ হজ করার জন্য অন্তত ৫০ হাজার মানুষ সৌদি আরব যান। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে যান অন্তত হাজার বিশেক মানুষ। চট্টগ্রাম এবং ঢাকার এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে এসব মানুষ ওমরাহ হজ করতে সৌদি আরব যান। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের কিছু মানুষ ওমরাহ হজ করতে সৌদি আরব গেলেও বেশিরভাগ মানুষ যাওয়ার প্রতীক্ষা করছিলেন। বিশেষ করে লাইলাতুল কদরের কারণে রমজানের শেষ দশ দিন বেশিরভাগ মানুষ ওমরাহ করতে ভিড় করেন। অনেকে সবকিছু ঠিকঠাক করে নিয়েছেন। এজেন্সিকে টাকা দিয়েছেন। এজেন্সির পক্ষ থেকে সৌদি আরবের মক্কামদিনায় হোটেল ভাড়া থেকে শুরু করে বিমানের টিকেট পর্যন্ত কেটে রেখেছেন। কিন্তু গত ৫ মার্চ থেকে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস ভিসা প্রদান অনেকটা বন্ধ করে দেয়। একের পর এক পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হচ্ছে।

আটাবের নেতা মুজিবুল হক শুক্কুর দৈনিক আজাদীকে জানান, সৌদি আরবের কোনো ভিসাই ফেরত দেওয়া হয় না। শতভাগ পাসপোর্টেই ভিসা প্রদান করা হয়। আমরা যত পাসপোর্ট জমা দিই না কেন ভিসা ছাড়া এম্বেসি পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে এমন নজির নেই। কিন্তু ৫ মার্চ থেকে ভিসা দেওয়ার হার দুই থেকে তিন শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে রমজানে ওমরাহ করার অপেক্ষায় থাকা চট্টগ্রামের বিশ হাজারের বেশি মানুষসহ সারা দেশের লক্ষাধিক মানুষ অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।

সূত্র বলেছে, সৌদি আরব হুট করে কেন ভিসা বন্ধ করে দিল তা নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। শুধু বলেছে, প্রচুর লোকজন হয়ে গেছে। এখন বাড়তি লোকজনের চাপ সামাল দেওয়া কঠিন হচ্ছে। তাই সারা পৃথিবী থেকে ওমরাহ প্রত্যাশীদের কোটা করে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের হাজিদের ব্যাপারেও কোটা করে দেওয়া হয়েছে। তবে সৌদি দূতাবাস অফিসিয়াল কোনো ব্যাখা দেয়নি বলেও হজ এজেন্সিগুলো জানিয়েছে।

জানা যায়, হজের খরচ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ ওমরাহ হজ করতে যাচ্ছেন। বছরে অন্তত তিন লাখ মানুষ এখন ওমরাহ করছেন। আগে ওটা ছিল এক লাখ।

গত ৫ মার্চ থেকে ভিসা বন্ধ করে দেওয়ায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক এজেন্সি জানিয়েছে, তারা একশটি করে পাসপোর্ট জমা দিয়ে মাত্র ২টিতে ভিসা পেয়েছে। দুই শতাংশ ভিসা দিয়ে এই বিপুল চাপ সামাল দেওয়া কঠিন হওয়ায় এজেন্সির কর্মকর্তাদের অনেকের দিশেহারা হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআলোচিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ঢাকায় গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধহিটু শেখের জবানবন্দি