ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা, পাঁচ অনুষদে ১৫ কেন্দ্র

নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ বিস্তারিত জানাল কমিশন

চবি প্রতিনিধি | সোমবার , ৬ অক্টোবর, ২০২৫ at ৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও গণনা পদ্ধতি, কেন্দ্র নির্ধারণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ব্যালট নিরাপত্তার বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল রোববার দুপুর ২টার দিকে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অডিটোরিয়ামে প্রার্থী ও আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন চাকসু নির্বাচন কমিশন।

সভায় প্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা ভোট প্রদান পদ্ধতি, ব্যালট প্রিন্টিং, ভোট গণনা, প্রার্থীদের এজেন্ট নির্ধারণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন ও পরামর্শ তুলে ধরেন। এসব প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মনির উদ্দিন ও অন্য কমিশনাররা।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মনির উদ্দিন বলেন, আমরা চাই একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক চাকসু নির্বাচন আয়োজন করতে। এজন্য শিক্ষার্থীদের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রশাসন আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে।

নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব প্রফেসর ড. এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, আমরা সভায় প্রার্থীদের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার সম্ভাব্য বিভিন্ন প্রস্তুতি এবং সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করেছি। তারাও তাদের মতামত দিয়েছেন। তিনি জানান, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ, পুরাতন কলা অনুষদ, নতুন কলা অনুষদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদ এই পাঁচটি অনুষদ ভবনে ভোটের কেন্দ্র থাকবে। নির্বাচনের জন্য মোট ১৫টি কেন্দ্রে সম্ভাব্য ৬৫টি নির্বাচনি কক্ষ, ১৪টি প্রিজাইডিং কক্ষ ও ৭টি সাবপ্রিজাইডিং কক্ষসহ মোট ৮৬টি কক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রত্যেক কক্ষে পাঁচটি করে ব্যালট বাঙ থাকবে। চারটি চাকসু ও একটি হল সংসদ নির্বাচনের জন্য ব্যবহৃত হবে। একটি কক্ষে সর্বোচ্চ ৫০০ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন এবং একজন ভোটার ভোট কেন্দ্রে সর্বাধিক ১০ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারবেন।

প্রার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ তিন দিন পিছিয়ে ১৫ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের কারণে ১৫ ও ১৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি থাকবে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী পুরাতন কলা অনুষদে সোহরাওয়ার্দী হল, নতুন কলা অনুষদে শাহজালাল, এ এফ রহমান ও আলাওল হল, বিজ্ঞান অনুষদে শাহ আমানত, শহীদ আবদুর রব ও মাস্টারদা সূর্যসেন হল, সমাজবিজ্ঞান অনুষদে নওয়াব ফয়জুন্নেসা, শামসুন্নাহার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও অতীশ দীপঙ্কর হল, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে প্রীতিলতা, বিজয় ২৪, শহীদ ফরহাদ হোসেন হল ও শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের ভোট গ্রহণ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪টি আবাসিক হল ও একটি হোস্টেল রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি ছাত্রদের এবং ৫টি ছাত্রীদের জন্য। এর বাইরে শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলও নির্বাচনের আওতায় থাকবে।

ভোটের নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিনির্ভর গণনা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেলের প্রধান প্রফেসর সাইদুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য ৪১৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। ব্যালট পেপারে ওএমআর পদ্ধতিতে ভোট গণনা করা হবে। যেমন ভর্তি পরীক্ষার বহু নির্বাচনি প্রশ্নপত্রের নম্বর গণনা করা হয়। প্রতিটি কক্ষে পাঁচটি ব্যালট বাঙ থাকবে।

তিনি বলেন, প্রত্যেক ব্যালট পেপারে আলাদা নিরাপত্তা কোড থাকবে। এই কোডের মাধ্যমে আমরা যাচাই করতে পারব ব্যালটটি আসল না নকল। বাইরের কোনো কাগজ যদি ওএমআর মেশিনে আসে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেটি শনাক্ত করতে পারব। প্রার্থীদের ছবি দিলে পৃষ্ঠাসংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে, তাই শুধুমাত্র নাম ও ব্যালট নম্বর থাকবে। একই নাম থাকলে ডাকনাম যোগ করা হবে। তিনি জানান, নির্বাচনে ক্যাম্পাসকে সিসিটিভির আওতায় আনতে বাইরের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। তবে এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

সভায় বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা অংশ নেন এবং ভোটগ্রহণ, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া নিয়ে মতামত প্রকাশ করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মনির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার ও সদস্য সচিব প্রফেসর ড. এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, প্রফেসর ড. মু. জাফর উল্লাহ তালুকদার, প্রফেসর মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী, . মো. আনোয়ার হোসেন, আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর সাইদুর রহমান চৌধুরী এবং আচরণবিধি মনিটরিং সেলের সদস্য প্রফেসর ড. খাদিজা মিতুসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবৃদ্ধির হার ১০-১৫ শতাংশ, এক বছরে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হোক
পরবর্তী নিবন্ধজ্বর হওয়ার সাথে সাথে ডেঙ্গু পরীক্ষার অনুরোধ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের