ঐকমত্য না হওয়া বাকি সংস্কার পরের সরকার করবে : ফখরুল

| বুধবার , ৩০ জুলাই, ২০২৫ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যেসব মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়নি, সেগুলো পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা আজকে দেখলাম, খুব ভালো লেগেছে, ১২টি বিষয়ে মৌলিক বিষয়ে আমরা একমত হতে পেরেছি। বাকি যে বিষয়গুলো আছে, সেই বিষয়গুলো নিশ্চয়ই আমরা যারা নির্বাচন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাব অথবা যারা আমরা সরকারে যেতে পারি, তাদের দায়িত্ব হবে, প্রতিশ্রুতি হবে, অঙ্গীকারবদ্ধ হবেন তারা যে, তারা বাকি কাজগুলো সমাধান করবেন।

ঢাকা জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ের জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বিএনপির মহাসচিব। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধের বিষয় স্বাভাবিক হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকের পত্রপত্রিকায় বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন বিতর্কের কথা, মতদ্বৈততার কথা বলা হয় খুব বড় বড় করে। আমি যে কথাটা বলতে চাই যে, গণতন্ত্রে তো কিছু মতবিরোধ থাকবেই। রাজনৈতিক দলগুলো যে সব এক কথা বলবে, তা তো না। এই বিষয়কে খুব বড় করে দেখিয়ে আমরা জাতির মধ্যে অযথা একটা বিভক্তি সৃষ্টি করেছি। খবর বিডিনিউজের।

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরাও চাই, অতি দ্রুত এই হত্যার বিচার হোক, আমরাও চাই যে সংস্কারগুলো যেগুলো খুব জরুরি দরকার, সেগুলো অতি দ্রুত হোক। মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্বাচনের আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, একটা জিনিস আমাদের সকলের বোধ হয় মনে রাখা প্রয়োজন, জনগণের প্রতিনিধিত্ব সম্পন্ন সরকার, এটা খুব জরুরি দরকার। কারণ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করা এবং এটা ছাড়া কাজ করার মধ্যে অবশ্যই কিছু পার্থক্য আছে। আমরা আশা করি যে, আমাদের সম্মানিত প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় ইতোমধ্যেই জনগণের সামনে যে অঙ্গীকার করেছেন, সে অনুযায়ী দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বড় একটি প্রশ্ন আছে, সে প্রশ্নটি হচ্ছে যে, আমাদেরকে প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করতে হবে, নির্মাণ করতে হবে। আমাদের যে এত বেশি সমস্যা এই সমস্যাগুলোর মূল কিন্তু রয়েছে যে, আমাদের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্টরা ভেঙে দিয়ে গেছে। সেটাকে আপনার নির্মাণ করতে হবে, পুনরায় নির্মাণ করতে হবে। কাজটা খুব সহজ নয়, সময় লাগবে, কঠিন হবে, কিন্তু ধৈর্য ধরতে হবে।

তিনি বলেন, এই ১৫১৬ বছর ধরে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে, অত্যন্ত একেবারে কনসার্টেড ওয়েতে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা মানুষের অধিকারগুলোকে বিলীন করে দেওয়া এবং একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কিছু কাজগুলো তারা করে গেছে। আমরা একটা ভয়ঙ্কর, ভয়াবহ, একটা মনস্ট্রাস একটা সময় পার করে এসেছি। আমি বারবার এই কথাগুলো বলে নিজেকে এবং আপনাদের সকলকে আমি ভারাক্রান্ত করতে চাই না। কিন্তু এটা সত্য যে সেই সময়টা ছিল আমাদের জন্য একটা ভয়ঙ্কর সময়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার সবচেয়ে বড় কাজ এখন করলেও আগে থেকেই বিএনপি সংস্কারের কথা বলে আসছে বলে মন্তব্য করেন তিনি বলেন, ২০১৬ সালে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া উপলব্ধি করেছিলেন, রাষ্ট্র কাঠামোটার পরিবর্তন করা দরকার। এই কাঠামোতে মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা তার পূরণ করা যাবে না। সেজন্য ভিশন ২০৩০ বলে আমরা একটা ডকুমেন্ট জনগণের সামনে তুলে ধরেছিলাম। সেখানে আজকে যে কথাগুলো হচ্ছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা, মানবাধিকারকে প্রতিষ্ঠা করা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এ কথাগুলো তখনই ছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিচার ও সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে জাতীয় বিপর্যয় হতে পারে : জামায়াত আমির
পরবর্তী নিবন্ধকংক্রিট মিক্সার লরিসহ ৬৪ লট পণ্যের নিলাম আজ