‘চট্টগ্রাম কবিতার শহর’ শিরোনামে গত সাত বছরের ধারাবাহিকতায় এবার অষ্টমবারের মতো বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে কবিতা উৎসব। গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর এমএম আলী রোডে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বাচিক শিল্প চর্চা কেন্দ্র তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের আয়োজনে দিনব্যাপী এ উৎসব উদ্বোধন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণীজন, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।
উদ্বোধনের পর উদ্বোধনী বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের শিল্পীরা। এরপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় প্রয়াত ভাষাবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ড. মাহবুবুল হকের প্রতিকৃতিতে। এ উৎসব তার স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।
তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সভাপতি কবি ভাগ্যধন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রাবণী দাশগুপ্তার সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিজন ও সংগঠক ডা. এস এম সারওয়ার আলম, আবৃত্তিকার অঞ্চল চৌধুরী, নাট্যজন ও সংগঠক স্বপন মজুমদার এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক সজল চৌধুরী।
বক্তারা বলেন, মানব সভ্যতার রূপায়ণে কবি ও কবিতা অবিচ্ছেদ্য অংশ। কালে কালে একটি দেশের, একটি সমাজের সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যায় তরুণরা। তাই তরুণদের সমাজ সচেতন ও দেশ সচেতন হতে হবে। তরুণরা যত বেশি শুদ্ধ শিল্পের চর্চা করবে তত তারা দেশ ও সমাজ সচেতন হবে।
বক্তারা আরো বলেন, বিপ্লবীর রক্তে রঞ্জিত এ চট্টগ্রামে লিখিত হয়েছে শোষণমুক্তির মহাকাব্য। এখানেই রচিত হয়েছে একুশের প্রথম কবিতা। তারই ধারাবাহিকতায় বন্দর নগরের বাঁকে বাঁকে জমা আছে কবিতার প্রবহমানতা। কবিতাকে ঘিরে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের এ বিশাল আয়োজন সেই প্রবহমানতারই ধারাবাহিকতা।
অনুষ্ঠানের প্রভাতী আয়োজনে কবিতা পাঠ করেন কবি সাথী দাশ, আশীষ সেন, রিজোয়ান মাহমুদ, খালেদ হামিদী, মো. আমানুল্লাহ, শাহীন মাহমুদ ও আজিজ কাজল। ছড়া পাঠ করেন উৎপল কান্তি বড়ুয়া, জসীম মেহবুব, বিপুল বড়ুয়া, আখতারুল ইসলাম, লিটন কুমার দাশ ও আবুল কালাম বেলাল। সকালের আয়োজনে শিশুদের অংশগ্রহণে ছিল শিশু প্রহর। এ পর্বে অর্ধশত শিশুশিল্পী একক ও বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে। বিকাল ৩টায় বৈকালিক আয়োজন শুরু হয় তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের বড়দের বিভাগের সদস্যদের একক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। এরপর মঞ্চে ‘কবিতার গান’ পরিবেশন করে উদীচী চট্টগ্রাম এবং আল তুষি। আবৃত্তিশিল্পী সেঁজুতি দে’র সঞ্চালনায় আবৃত্তি করেন মাশকুর এ সাত্তার কল্লোল, নাজমুল আহসান, ফয়জুল্লাহ সাইদ, মাসুম আজিজুল বাসার, ফারুক তাহের, চিংহলা মং চৌধুরী, সুকান্ত গুপ্ত, রেখা নাজনীন, মশরুর হোসেন, বনকুসুম বড়ুয়া, সুপ্রিয়া চৌধুরী, সেলিম ভূঁইয়া, ইকবাল হোসেন জুয়েল, অনির্বাণ চৌধুরী, উম্মে সালমা নিঝুম, ঐশী পাল, আবদুল্লাহ ফারুক রবি ও ফাইরুজ নাওয়ার দূর্দানা।
কবিতা পাঠ করেন কবি কমলেশ দাশগুপ্ত, হাফিজ রশিদ খান, নিশাত হাসিনা শিরিন, পুলক পাল, অনুপমা অপরাজিতা, তাপস চক্রবর্তী, মানজুর মুহাম্মদ, মনিরুল মনির, রিমঝিম আহমেদ ও আলী প্রয়াস।
এরপর আবৃত্তি করেন শুভ্রা বিশ্বাস, প্রণব চৌধুরী, শাহরিয়ার তানজিম, শামীমা ইয়াছমিন, জেবুন নাহার শারমিন, বর্ষা চৌধুরী, অনন্যা চৌধুরী, মাহফুজা হক স্নিগ্ধা, সঞ্জয় মহাজন ও স্নিগ্ধা বড়ুয়া।