এ বর্ষায়ও জলাবদ্ধতার শঙ্কা

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ।। স্লুইচ গেট নির্মাণ দ্রুত শেষ করার দাবি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২১ এপ্রিল, ২০২২ at ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমের আগে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের কপালে ভাঁজ পড়ে। কারণ বর্ষায় নদী-খাল পানিতে টইটম্বুর থাকে। এছাড়া থাকে জোয়ারের পানিরও চাপ। তাই অনেক সময় দেখা যায়, রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায়ও জোয়ারের পানির ধাক্কায় চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের নিম্নাঞ্চল হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চাক্তাই খালের কর্ণফুলী মোহনায় জোয়ারের পানি প্রতিরোধক স্লুইচ গেট নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে। কিন্তু উদ্বোধনের প্রায় চার বছর হতে চললেও এখনো নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। ফলে এখনো ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এক সময় চাক্তাই খাল দিয়ে নৌপথে শত শত কোটি টাকার বাণিজ্য হত। কালের পরিক্রমায় সেই চাক্তাই খাল চীনের দুঃখ হোয়াংহো নদীর মতো চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের দুঃখে পরিণত হয়েছে। এছাড়া খালের দুই পাড়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, পলি জমে খাল ভরাট হয়ে যাওয়া এবং তলা পাকা করার কারণে স্থায়ীভাবে নাব্যতা হারিয়েছে চাক্তাই খাল। ফলে নৌ-বাণিজ্য বর্তমানে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। অপরদিকে স্লুইচগেট নির্মাণের জন্য খালের একাংশ ভরাট করার কারণে ব্যাহত হচ্ছে নৌপথে পণ্য পরিবহন। বাধ্য হয়ে চাক্তাই মোহনা পেরিয়ে পণ্য লোড-আনলোড করতে হয়। এতে পণ্য পরিবহনে খরচও বেড়ে গেছে।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রতি বর্ষাতে চাক্তাই খাতুনগঞ্জে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার কারণে স্থবির হয়ে যায় ব্যবসা-বাণিজ্য। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় দোকান-গুদামের প্রবেশমুখও উঁচু করেন। কিন্তু প্রতি বছরই বাড়ে জোয়ারের পানির উচ্চতা। তবে শেষ পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান হয়নি। প্রায় চার বছর আগে চাক্তাই ও রাজখালী খালের মোহনায় জোয়ারের পানি প্রতিরোধে স্লুইচগেট নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করে সিডিএ।

এত বছর পেরিয়ে গেলেও স্লুইচ গেটের নির্মাণ শেষ হয়নি। উল্টো স্লুইচগেট নির্মাণের জন্য কর্ণফুলীর মোহনায় চাক্তাই খাল ও রাজাখালী খালের একাংশ ভরাট করা হয়েছে। এতে খালও সংকুচিত হয়ে গেছে। চাক্তাই খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের দুর্দশা ঘুচানোর জন্য বর্ষা শুরুর আগেই চাক্তাই খালের দুই পাড়ের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ এবং ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের মাধ্যমে খাল সংস্কার করতে হবে। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড ও ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন আজাদীকে বলেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জে জোয়ারের পানির সমস্যা দীর্ঘ দিনের। বিশেষ করে জোয়ারের সময় যখন ভারী বৃষ্টিপাত হয়, তখন চাক্তাই খাতুনগঞ্জের নিম্নাঞ্চল হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে যায়। আপনারা জানেন, গত ২০১৭ সালের জুন-জুলাইয়ে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ব্যবসায়ীরা তিনশত কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েন। তাই আগামীতেও যে এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না, সেটি বলা মুশকিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাজেট ৯ জুন, করের বোঝা বাড়বে না : অর্থমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধকয়েকটি রাজনৈতিক দল সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করছে : প্রধানমন্ত্রী