নগরীর অন্যতম প্রধান জলাশয় আগ্রাবাদ রেলওয়ে ডেবা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অযত্ন আর অবহেলায় এই ডেবার চারদিক ক্রমে ভরাট হতে শুরু করেছে। কোনো ধরনের সংস্কার না করা, অবাধে ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হয়ে ওঠা এবং কচুরিপানার জমাট বেঁধে ডেবার অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠেছে।
সূত্র জানিয়েছে, আগ্রাবাদ ডেবা অত্যন্ত সুন্দর এবং টলটলে পানির চমৎকার এক উৎস। ১৯০৮ সালে গোসাইলডাঙ্গা মৌজার বিপুল পরিমাণ ভূমি আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে বন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনকালে লাখ লাখ ঘনমিটার মাটির প্রয়োজন হয়। পুরো এলাকাটি গ্রাম এবং অনেকটা নিচু এলাকা হওয়ায় ডেবা থেকে মাটি কেটে রেললাইন উন্নয়ন করা হয়। লক্ষ লক্ষ ঘনমিটার মাটি কাটতে কাটতে দেখা যায় যে, ২৭ একরেরও বেশি আয়তনের বিশাল এক জলাশয় গড়ে উঠেছে। পরবর্তীতে এই জলাশয় থেকে পানি নিয়ে যাওয়া হতো বিভিন্ন জাহাজে, রেলওয়ের ইঞ্জিনের জন্য এবং স্থানীয় আবাসিক বাসাবাড়িতে। বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন ডেবার মোট আয়তন ২৭.৪ একর। অবশ্য এই ডেবাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ৩ একরের মতো জায়গার মালিকানা দাবি করে আসছিল বহুদিন ধরে। পরবর্তীতে বিষয়টির মীমাংসা হয় বলেও জানা গেছে।
নগরীর বুকে বিশাল জলাশয় আগ্রাবাদ ডেবা অনেকটা অনাদরে অযতনে পড়ে আছে। প্রতিনিয়ত দখল-দূষণে নষ্ট হচ্ছে। রেলওয়ে মৎস্য চাষের জন্য ডেবা ইজারা দেয়। কিন্তু চারদিকের হাজার হাজার মানুষের ক্রমাগত দখল দূষণে এটির ভবিষ্যত নিয়েও শংকা প্রকাশ করা হয়েছে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপকালে জানা গেছে, রেলওয়ে ডেবা নিয়ে কর্তৃপক্ষের এক ধরনের উদাসীনতা রয়েছে। বিশেষ করে ডেবার উত্তর পশ্চিম কোনায় অবস্থিত মসজিদের একাধিক মুসল্লি প্রতিনিয়ত ডেবা দখল এবং দূষণ হচ্ছে বলে জানান।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের এস্টেট শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, দখল দূষণের কথা ঠিক নয়। আমরা ইজারা দিই। মাছ চাষ চলে। ইজারাদারই ডেবার রক্ষণাবেক্ষণ করেন। তবে বড় ধরনের একটি উদ্যোগ নিয়ে ডেবা সংস্কার করা প্রয়োজন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সিডিএ ডেবাকে নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা বললেও প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গক্রমে সিডিএ চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করে বলেন, রেলওয়ের ডেবা অনেক বড় একটি জলাশয়। এটিকে ভরাটের কোনো সুযোগ নেই। ডেবা ওভাবেই সংরক্ষিত থাকবে। তবে এর চারপাশে সৌন্দর্যবর্ধন কিংবা ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে দেয়া যেতে পারে।