চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন সায়েন্স এন্ড ফিশারিজ অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। দুইদিনব্যাপী চার শিফটে মোট ৭৪ হাজার ৭০৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৯ হাজার ৬০৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন– যা শতকরা হারে ৭৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। গত মঙ্গল ও বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যান্তরেই সব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার যুগ্ম কো–অর্ডিনেটর ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রাশেদ মোস্তফা এসব তথ্য আজাদীকে নিশ্চিত করেন।
আজ বি ইউনিটের দুই শিফটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সকাল ও বিকালের শিফটে ১৭ হাজার ৬৬৫ জন করে শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। আগামীকাল সকালের শিফটে ১৭ হাজার ৬৬৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের মাধ্যমে বি ইউনিটের পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।
পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। এসময় তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রশ্ন ফাঁসের কোনো নজির নেই। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছি। পরীক্ষার হলে কিংবা বাইরে কোনো প্রকার অনিয়ম জালিয়াতি চোখে পড়লেই সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম শিকদার বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আগত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধার জন্য শাটল ট্রেনের বিশেষ শিডিউলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন যাতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটেনি।
খাবারের দাম ও গাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ: ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে খাবারের দাম ও যানবাহনের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তা মানতে নারাজ ক্যাম্পাসের হোটেল ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ক্যাম্পাসের রিকশাচালকরা নির্ধারিত ভাড়ার থেকে কয়েক গুণ বেশি চাচ্ছেন নবাগতদের থেকে। বেশি ভাড়া না দিলে কোনো চালকই যেতে রাজি হচ্ছেন না। তাই অসহায় হয়ে অতিরিক্ত মূল্যেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে ভর্তিচ্ছুদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত রিকশা ভাড়া ৩০ টাকা। কিন্তু এখন চাওয়া হচ্ছে ১২০–১৫০ টাকা। জিরো পয়েন্ট থেকে যে কোনো ছাত্রী হলের ভাড়া ১৫ টাকা। তা এখন হয়ে গেছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। এভাবে প্রতি গন্তব্যে ৫০ থেকে ৬০ টাকা ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছেন চালকরা। অন্যদিকে, শহর থেকে ক্যাম্পাসে বাস মালিক সমিতি নির্ধারিত ৩ নম্বর বাসে ভাড়া ২০ টাকা এবং দ্রুতযানে ৪০ টাকা। সেই ভাড়া এখন নেওয়া হচ্ছে ৪০ এবং ৬০ টাকা করে। ২০ টাকার ভাড়া সিএনজি চালকরা নিচ্ছেন ৮০–১০০ টাকা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭–১৮ সেশনের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থী বাড়তি ভাড়া আদায় করা চালকদের বাধা দেন। এরকম ১০ সিএনজি চালককে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে সাড়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, হোটেলগুলোতে খাবারের চার্ট দেওয়া আছে। এর বেশি রাখতে পারবে না। এ বিষয়ে তাদের কড়াভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। যেসব হোটেলে বেশি রাখছে অভিযোগ পাচ্ছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, রিকশা ভাড়াও নির্ধারিত করা আছে। যদি কেউ বেশি রাখে তার ছবি তুলে রাখবেন। আমরা ব্যবস্থা নেবো।