এস কে সুরের স্ত্রী-কন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন

| শুক্রবার , ৩০ মে, ২০২৫ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এস কে) সুর চৌধুরীর স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী, কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদের বিবরণী দাখিল না করায় তাদের বিরুদ্ধে গত বছরের ডিসেম্বরে মামলা করে দুদক। সেই মামলার অভিযোগপত্র গতকাল বৃহস্পতিবার অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানান দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।

তিনি বলেন, এস কে সুর চৌধুরীর স্ত্রী ও কন্যা এবং রাশেদুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরিই এসব অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পি কে হালদারকে (প্রশান্ত কুমার হালদার) দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতবাংলাদেশ বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় কার্যক্রম চালাচ্ছে দুদক। খবর বিডিনিউজের।

ক্ষমতার পালাবদলের পর গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ‘আর্থিক অনিয়মের’ অভিযোগে এস কে সুরের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে দুদক। ওই মামলায় গত জানুয়ারিতে কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। এর আগে গেল বছরের ২৮ আগস্ট এস কে সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেয় আদালত।

পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এস কে সুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের মার্চে তাকে দুদকে তলব করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের আগস্টে এস কে সুর ও তার পরিবারের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক।

এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ আছে, এস কে সুর ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ‘সহযোগিতা’ করেছেন এবং ‘সুবিধা’ নিয়েছেন।

পি কে হালদারের কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২১ সালের জুলাইয়ে এস কে সুর ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় এনবিআর। সে বছর ১৫ মার্চ হাই কোর্ট এক এক আদেশে প্রশ্ন তোলে, এস কে সুর চৌধুরীকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তবে ২০২২ সালের ২৯ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হওয়ার পর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

পিকে হালদার নানা কৌশলে নামেবেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেন এবং এ কাজে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার ‘যোগসাজশ’ ছিল বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য। পিকে হালদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও দায়ের করেছে দুদক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় আ.লীগ নেতাসহ আটক ২, অস্ত্র উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধসাবেক বন সংরক্ষক মোশাররফের বিরুদ্ধে মামলা