চট্টগ্রাম নগরীর একটি কারখানা থেকে এস আলমের বিলাসবহুল গাড়ি সরানোর অভিযোগে স্থগিত হওয়া কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এস এম মামুন মিয়ার দলীয় পদ পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া উপলক্ষে আনন্দ মিছিল ও সভার আয়োজন করে কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপি।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) উপজেলার এজে চৌধুরী কলেজ মাঠ থেকে আনন্দ মিছিল শুরু হয়ে মইজ্জারটেক মোড়ে এসে শেষ হয়।
দীর্ঘ এই মিছিলে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঢল নামে। আনন্দ মিছিল শুরু হওয়ার আগে এজে চৌধুরী কলেজ মাঠে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোহাম্মদ ওসমানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন পদ ফেরত পাওয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এস এম মামুন মিয়া।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের ইমেজে কালিমা লেপন করতে একটি চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। আমি গত ৪০ বছর ধরে শহীদ জিয়ার আদর্শ ধারণ করে রাজনীতির মাঠের রয়েছি। আমি পুরোপুরি রাজনীতির মানুষ। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা অভিযোগ করে আমার পদ স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু আমার দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান, সিনিয়র নেতৃবৃন্দ তদন্ত করে দেখেছেন অভিযোগটি সঠিক নয়। পরবর্তীতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। আবার প্রমাণিত হল কোন ষড়য়ন্ত্রই বিএনপির অগ্রযাত্রা থামানো যাবে না।
দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিথ্যা অভিযোগে যখন আমাকে রাজনীতির মাঠের বাইরে রাখা হয়েছিল তখন আপনারা প্রতিবাদ করেছিলেন। আমার পাশে ছিলেন। কোনোকিছুর বিনিময়ে আপনাদের ঋণ আমি শোধ করতে পারব না। গত ১৫ বছর আমি মামলা হামলা অত্যাচার সয়ে রাজনীতি করেছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। সামনের পথ সকলে একসাথে পাড়ি দেব, এই দেশকে সবাই মিলে গড়ব।
এ সময় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি সাবেক সিনিয়র সদস্য এডভোকেট এস এম ফোরকান, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক গিয়াস উদ্দিন ফারুকী, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল গফুর, সোলায়মান দোভাষী, আব্দুল কাদের সুজন, আলী আব্বাস, জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুদ্দিন সবুজ, সদস্য আবু তৈয়ব, এজাবত উল্লাহ, সালেহ জহুর, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইদ্রিস হায়দার, কাজী মঈন উদ্দীন টিপু, এটিএম হানিফ, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের, সালাউদ্দিন, এস এম ফারুক, সেলিম খান, মনির মুন্সী, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াসিম, আলমগীর, জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশীদ, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক এম শফিউল করিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মাঈনুদ্দীন, জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আলমগীর, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম, বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক নুরুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জাহিদুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ফারুক, সদস্য সচিব দিদারুল আলম, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি তৈয়বুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মনির, উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক আব্দুল মন্নান, সদস্য সচিব বাহারুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট এলাকায় চট্টগ্রামের মীর পাল্প এন্ড পেপার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানা থেকে বিলাসবহুল কয়েকটি গাড়ি বের হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় আবু সুফিয়ান, এনামুল হক ও এস এম মামুন মিয়া জড়িত এমন অভিযোগ করা হয়। পরে তাদের কারণ দর্শানো চিঠি দিয়ে সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করেন বিএনপির হাই কমান্ড। পরবর্তীতে গত বুধবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত তিনটি আলাদা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের উপর আরোপিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি ঘোষণা করেন।