এস আলম গ্রুপের অর্থপাচার নিয়ে তদন্ত চলছে : বিএফআইইউ প্রধান

| বুধবার , ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগের বিষয়ে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস। অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএফআইইউয়ের ২০২২২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

দেশের আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন ও সন্দেহজনক কার্যক্রম গত এক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে উঠে এসেছে বিএফআইইউ এর এবারের প্রতিবেদনে। ভোজ্যতেল ও ভোগ্যপণ্য ব্যবসা থেকে জ্বালানি খাতে নাম লেখানো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ নিয়ে গত বছর জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রচারিত হয়। শেষ পর্যন্ত তা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম মিলনায়তনে বিএফআইইউয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে ওই অভিযোগ নিয়ে এ সংস্থার সর্বশেষ পদক্ষেপ জানতে চান সাংবাদিকরা। উত্তরে মাসুদ বিশ্বাস বলেন, সর্বশেষ আদালত থেকে যে রায় এসেছে, সে অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। আমরা সে কাজগুলো করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নথির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশ থেকে ৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার বিদেশে বিনিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বৈধ উপায়ে সিঙ্গাপুরে ১ লাখ ৭ হাজার ডলার পাঠিয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানও এস আলমের মালিকানাধীন নয়।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ সে সময় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেয়।

এস আলমের অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান করে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় সেই আদেশে। আর এই অর্থপাচার ঠেকাতে বিএফআইইউ, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যর্থতা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

সর্বশেষ গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টের ওই রুল খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। তবে দুদক, বিএফআইইউ বা বাংলাদেশ ব্যাংক চাইলে নিজস্ব উদ্যোগে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে পারবে বলে রায়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। আদালতের ওই আদেশের আলোকেই বিএফআইইউ এস আলমের বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মাসুদ বিশ্বাস।

সাবেক এক মন্ত্রীর বিদেশে ২ হাজার কোটি টাকার সম্পদের উৎস নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করেন আরেক সাংবাদিক। এর উত্তরে মাসুদ বিশ্বাস বলেন, বড় দুটি ঘটনার এটি একটি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও আমরা যোগাযোগ করছি। আমাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তবে অর্থ একবার পাচার হয়ে গেলে তা ফেরানো যে কঠিন, সেই বাস্তবতা তুলে ধরে বিএফআইইউ প্রধান বলেন, আমরা নতুন দশটি রাষ্ট্রের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করতে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করার উদ্যোগ নিয়েছি। অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা চলমান রয়েছে। আমরা অর্থপাচার বন্ধে বেশি জোর দিচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় পথ নাট্যোৎসব উদ্বোধন
পরবর্তী নিবন্ধজামানত সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা করতে চায় ইসি