এস আলমের ছেলের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হচ্ছে

ইসলামী ব্যাংকের ৯৯৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

| বৃহস্পতিবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ

প্রায় সাত বছর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৯৯৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশনদুদক। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সুবিধা পাওয়া চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের (এস আলম) ছেলে আহসানুল আলম। ইসলামী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের এই মামলায় তার সঙ্গে আসামি করা হচ্ছে আরও ৫৩ জনকে। গতকাল বুধবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন ঢাকার সেগুনবাগিচায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে। যে কোনো দিন মামলা হবে। খবর বিডিনিউজের।

আহসানুল আলমের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ৯২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়১ এ একটি মামলা হয়েছে। সে মামলায় তার সঙ্গে আসামি করা হয়েছে ৫৭ জনকে। মুরাদ এন্টারপ্রাইজের নামে ঋণ নিয়ে এই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৯ ডিসেম্বর মামলাটি করা হয়েছে। দুদকের এই মহাপরিচালক বলেন, অনুসন্ধানে নাম আসা এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রাম জুবিলী রোড শাখা থেকে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ৯৯৩ কোটি ৭০ লাখ ২৩ হাজার ৪৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া বিনিয়োগ করা অর্থের উৎস গোপন করার জন্য পাচার করার অভিযোগও আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, আসামিদের বিরদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৮৬৭ /৪৬৮/৪৭১/৪৭৭ক/১০৯, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫() ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪() ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্যাপক ঋণ জালিয়াতির ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায়। নিয়ম না মেনে ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামে বেনামে ব্যাংকটির চট্টগ্রামের তিন শাখা থেকে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে। দুদকে এ অভিযোগ আমলে নিয়ে তা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় সংস্থার উপপরিচালক সিরাজুল হককে। পরে তিনি বদলি হলে দায়িত্ব বর্তায় দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাতের কাছে। অনুসন্ধান তালিকা অনুযায়ী আহসানুল আলম ছাড়াও এ মামলায় যাদের আসামি করা হচ্ছে তারা হলেনসাবেক পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির (ইসি) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সাবেক নমিনী পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ, সাবেক ভাইস চেয়ারমান ডা. তানভীর আহমদ, সাবেক পরিচালক মো. কামরুল হাসান, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর, সাবেক পরিচালক ড. মো. ফসিউল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, সাবেক পরিচালক জামাল মোস্তফা চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য আবু সাইদ মোহাম্মদ কাশেম, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী। এছাড়া আসামি করা হচ্ছে ব্যাংকটির সাবেক ডিএমডি (সিআরও) মোহাম্মদ আলী, সাবেক ডিএমডি (সিএইচআরও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, সাবেক এসইভিপি ও বর্তমানে এএমডি মো. আলতাফ হোসেন, সাবেক ডিএমডি মোহাম্মদ সাব্বির, এসইভিপি, জি এম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের, সাবেক ডিএমডি মিফতাহ উদ্দিন, সাবেক এসইভিপি মোহাম্মদ উল্লাহ, সাবেক ডিএমডি আবুল ফাইয়াজ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সাবেক এসইভিপি এবং বর্তমানে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, এঙিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (চুক্তি ভিত্তিক) কাজী মো. রেজাউল করিম, জুবিলী রোড শাখার সাবেক শাখা প্রধান ও বর্তমানে বংশাল শাখার ম্যানেজার এসভিপি সোহেল আমান, জুবিলী রোড শাখার সাবেক প্রধান ও বর্তমানে আগ্রাবাদে ইসলামি ব্যাংক ট্রেইনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শাহাদাৎ হোসেন। আসামির তালিকায় আরও থাকছেন ইসলামী ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখার সাবেক প্রধান ও বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক ট্রেইনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির এভিপি মো. মাইন উদ্দিন, জুবিলী রোড শাখার এফএভিপি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সাবেক এসইভিপি ও চট্টগ্রাম উত্তর জোনের প্রধান (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) মো. নাইয়ার আজম, বর্তমানে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমিতে কর্মরত সাবেক ইভিপি ও চট্টগ্রাম উত্তর জোনের প্রধান মুহাম্মদ নূরুল হোসাইন কাওসার, এসএভিপি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী, প্রোপ্রাইটর, বাণিজ্য বিতান কর্পোরেশন মো. তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাপার্চার ট্রেডিং হাউজ স্বত্ত্বাধিকারী এস এম নেছার উল্লাহ, ড্রিমস্কেপ বিজনেস সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ মহসিন মিয়াজী, এঙিটেন্স ট্রেড এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারী মো. সালাহ উদ্দিন (সাকিব), ফেন্সিফেয়ার কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল মজিদ খোকন, এপিক অ্যাবল ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মো. ইকবাল হোসেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশাহ আমানত সেতু এলাকায় পরিবহন শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ
পরবর্তী নিবন্ধসেই শিশুর পিতা-মাতা ঠিক করল আদালত