এসএমই খাতে প্রণোদনার ঋণ বিতরণে ধীরগতি

| শুক্রবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২০ at ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ

এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল থেকে বিশষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণে ধীর গতির কারণ খুঁজতে ধারাবাহিক বৈঠক করে যাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। করোনা ভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এসএমইখাতের ঋণ বিতরণের স্থবিরতা দূর করতে প্রথমবারের মতো গতকাল ২৬ নভেম্বর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ঋণ বিতরণে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করবে অর্থ মন্ত্রণালয়। মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলতি বছরের ২৬ মার্চ সরকার ঘোষিত ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির মধ্যে এপ্রিল মাসে সরকার এসএমইখাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। অক্টোবর শেষে ওই প্যাকেজ থেকে মাত্র ৬ হাজার ৫শ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ক্ষুদ্র ও মাঝারিখাতের উদ্যোক্তারা কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে আগস্ট শেষে ৩ হাজার ৫২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ বিতরণে ধীর গতির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়ী করেছেন। খবর বাংলানিউজের।
এসএমইখাতে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য উদ্যোগ নেওয়ায় অর্থ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও উদ্যোগী হওয়া উচিত ছিল।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে ব্যাংক এবং ব্যবসায়ীদের উৎসাহ কমে গেছে। বড় শিল্পের জন্য বরাদ্দকৃত ৩৩ হাজার কোটি টাকা। অক্টোবর শেষে ঋণ বিতরণের পরিমান ২৩ হাজার কোটি টাকা। আগস্ট শেষে বিতরণ হয়েছিল ২২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং বৃহৎ শিল্পের জন্য ঘোষিত ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ৬ হাজার ১১৭ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই বিতরণ হয়নি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রণোদনা প্যাকেজ শতভাগ বাস্তবায়নে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকসহ সবধরণের অংশীজনদের মতামত গ্রহন করা হবে বৈঠকে। বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএমইখাতে ঋণ বিতরণের শেষ সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সময় আছে আর মাত্র একমাস। ৩১টি ব্যাংক ও ১৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতে। বৈঠকে এসব বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।
অপর দিকে রপ্তানিমুখী পোশাক মালিকরা করোনা ভাইরাস মহামারির সময় শ্রমিকদের বেতন-ভাতার জন্য নেওয়া ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য দুই বছরের পরিবর্তে ৫ বছর সময় চেয়েছেন। প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক মালিকরা ২ শতাংশ সুদে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। তারা গ্রেস পিরিয়ড ছয়মাস থেকে বাড়িয়ে এক বছর করার দাবি জানিয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উদ্যোগে অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল পর্যালোচনা সভায় দেখা গেছে, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ২ শতাংশ সুদের হারে ১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করা হয়েছে। ৩ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে ৯ হাজার ৮৮২ জন কৃষক মাত্র ২৭৬ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন এবং কৃষিখাতের ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে ১৭ হজার ৮০১ জন ৪৯৭ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন।
গত অর্থবছরে প্রাক্কলিত ৮ দশমিক ২ শতাংশের জায়গায় দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নেমেছে ৫ দশমিক ২ শতাংশে। কারণ মার্চ থেকে করোনা দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং কর্মসংস্থানকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহোয়াটস অ্যাপের বার্তা মুছে যাবে স্ক্রিনশট নিলে জানাবে মেসেঞ্জার
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ২৩.৩৭ কোটি টাকা