তুর্কমেনিস্তান–বাহরাইন ম্যাচ ড্রয়ের পর বাংলাদেশ দলের কারো জানা ছিল না যে, উইমেন’স এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের বৈতরণী পেরিয়ে মূল পর্বে উঠে গেছেন তারা। খবরটি জানার পর অবিশ্বাস্য আর অকল্পনীয় আনন্দের দোলাচলে দুলছিল মেয়েরা। ঋতুপর্ণা চাকমা বললেন, অভাবনীয় প্রাপ্তির উচ্ছ্বাস প্রকাশের ভাষা জানা নেই তারও। মিয়ানমারকে হারিয়ে টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপে শীর্ষে উঠেছিল বাংলাদেশ। এরপর দিনের অন্য ম্যাচে তুর্কমেনিস্তান ও বাহরাইন ড্র করলে নিশ্চিত হয়ে যায় মেয়েদের প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলা। ওই দিনের অনুভূতি নিয়ে কথা বলেন ঋতুপর্ণা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ফেইসবুক পাতায় শুক্রবার পোস্ট করা ভিডিওতে তিনি খুলে দিলেন মনের আগল। ‘এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ওঠার অনুভূতি আসলে বলে প্রকাশ করতে পারব না। আমরা যখন জানতে পারি যে, আমরা কোয়ালিফাই করেছি, এটা আসলে কল্পনার বাইরে ছিল। আমরা বহু বছর পর এত কষ্ট করে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছি। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন।’ ‘জেতার পর মাকে কল দিয়েছি। পরিবারের সবাইকে। তারা সবাই খুব খুশি দুটি গোল করেছি দেখে। মা তো অসুস্থ। আমার গোল করার কথা শুনে সে অনেক খুশি, বলছিল যে তার আর নিজেকে অসুস্থ লাগছে না। আমরা আসলে কোনো উদযাপনই করিনি। আরেকটা ম্যাচ বাকি আছে। তারপর উদযাপন করার পরিকল্পনা আছে।’ বাছাইয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচে শনিবার তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। তবে এখনও ঘুরে ফিরে আসছে মিয়ানমারের বিপক্ষে পাওয়া ২–১ গোলের জেতা ম্যাচের স্মৃতি। ওই ম্যাচেই জোড়া গোল উপহার দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। দ্বিতীয় গোলটি করার পর দুই হাতে মুখ ঢেকে অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে করেছিলেন উদযাপন। ওই ভঙ্গি নিয়েও কথা বলেন তিনি। ‘অমন উদযাপনের কোনো কারণ নেই। যখন আমি দ্বিতীয় গোলটা করি। এই অনুভূতি আমি আসলে বলে প্রকাশ করতে পারব না। আমি খুব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম।’ সামনের পথচলায় সমর্থকদের পাশে চাইলেন ঋতুপর্ণা। বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদও রাঙামাটি থেকে উঠে আসা এই ফরোয়ার্ড জানালেন প্রত্যয়ী কণ্ঠে। ‘বাংলাদেশের সমর্থকদের অবশ্যই বলব, যেভাবে আমাদের সমর্থন করে যাচ্ছেন, আগামীতেও যেন এভাবে সমর্থন দিয়ে যান। আপনাদের সমর্থনে আমরা আরও ভালো রেজাল্ট এবং আরও ভালো একটা জায়গায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারব। আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল আমরা যেহেতু দুবার সাফ চ্যাম্পিয়ন, এখন আবার কোয়ালিফাই করলাম। ধীরে ধীরে আমার লক্ষ্য ছিল এশিয়ান কাপ খেলার। বাংলাদেশ দলকে একটা ভালো পর্যায় ও ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার। সেটাই আমরা ধীরে ধীরে করছি।’
ঋতুপর্ণা প্রশংসায় ভাসালেন কোচ পিটার জেমস বাটলারকে, যার বিরুদ্ধে গত উইমেন’স সাফ জয়ের পর ‘বিদ্রোহ’ করা ১৮ জনের মধ্যে ছিলেন তিনি নিজেও। মিয়ানমার ম্যাচের পরই বাটলার বলেছিলেন, ঋতুপর্ণা মধ্যপ্রাচ্য বা আরও ভালো মানের লিগে খেলার সামর্থ্য রাখে। এ নিয়েও ঋতুপর্ণা তুলে ধরলেন নিজের ভাবনা। ‘আমরা একটা ভালো কোচ পেয়েছি। উনি সবসময় আমাদের ভালোই চান। উনি যে প্রশংসা করেছেন, জানি না এর কতটুকু (আমার) প্রাপ্য।’
