এল.এ. চৌধুরী : আদর্শ মানুষ, আদর্শ পিতা

মসউদ উশ শহীদ | বৃহস্পতিবার , ১৩ জুন, ২০২৪ at ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

১৯৬৪ সালে আমি স্থায়ীভাবে চাটগাঁ শহরে চলে আসি। তখন আমি সাতকানিয়া কলেজের ছাত্র। লেখাপড়ার ছেদ পড়ে বাবার মৃত্যুতে। কিন্তু সাহিত্যচর্চায় নতুন মাত্রা যোগ হয় শহরে এসে। সম্ভবত মেজভাই জহুরউশ্‌শহীদের সাথে একদিন আমি এল..চৌধুরী সাহেবের বড় জামাতা চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল শিল্পী সবিহউলআলমের চট্টগ্রামের প্যারেডের কোণায় “তালতলা”র বাসায় যাই। সেখানে সেলিমা ভাবী ও জনাব মেজবাহ উদ্দিন জঙ্গীর সাথে আমার পরিচয়। মেজবাহের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে তাদের বাড়িতে যখনই সময় পেতাম চলে যেতাম। মেজবাহ’র বাবা জনাব এল.. চৌধুরী আমাকে ডেকে বসাতেন। প্রথমে আপ্যায়ন তারপর নানা প্রসঙ্গে আলোচনা করতেন, কখন আলোচনায় বয়সের ব্যবধান ঘুচে যেতো। প্রথম প্রথম আমি তাঁকে একটু ভয় পেতাম। মেজবাহ না থাকলে আমি চলে আসতাম। এভাবে কয়েকদিন ফিরে আসার পর তিনি একদিন আমাকে ডেকে বললেন “প্রতিদিন ফিরে যাও কেন? তাঁর কথা শুনে ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে এল। আমি আমতাআমতা করছিকী জবাব দেব। বসার পর তিনি কথা বলতেন।

এল.. চৌধুরী। তিনি একাধারে সমাজ সেবক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক নেতা ও হৃদয়বান ব্যক্তিত্ব। আসলে তিনি একজন অনন্য সাধারণ আদর্শ মানুষ। হ্যাঁ সেই অসাধারণত্ব খুঁজে পেলাম মুক্তিযুদ্ধের সময়। আমি মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছি। আমার বন্ধু বান্ধবরা তো আছেই, চট্টগ্রামে নবাব সিরাজউদদৌলা রোডের দেওয়ান বাজার সাব এরিয়ার ডা.আজিজ উল্লাহ সাহেব আমার মেজ ভাই জহুরউশশহীদও আমাকে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরীর কাজে লাগালেন। চন্দনপুরার অরোরা প্রিন্টার্সের মালিক বেবী সাহেবের প্রেসে বিভিন্ন রকম লিফলেট ছাপা হতো। এসব আমাকে দেখতো হতো। ঐ প্রেসে যাবার পথেই ছিল মেজবাহদ্দিন জঙ্গীর বাবা জনাব এল..চৌধুরীর বাড়ি। এদিকে মেজবাহ এবং তার ছোট ভাই বুরহানউদ্দিন জঙ্গীও মুক্তিযুদ্ধে কাজ করেছেন। তিনি একটি রেডিও মেরামতের দোকান “সবকিছু” এ নামে খুলে বসলেন ৮৫ নম্বর দেওয়ান বাজারে নবাব সিরাজউদদৌলা সড়কে। সেখানে সীমান্তের ওপার (আগারতলা) থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নানারকম বুলেটিন ও পত্রিকা আসতো। আমরা এসব পত্রিকা পড়তাম আর খুব গোপনে সেইসব পত্রিকা ইত্যাদি বিতরণ আর বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা করতাম। এদিকে জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরী অনুসারীরা চন্দনপুরা মসজিদের পেছনে একটি তথ্য কেন্দ্র খুলেছেনমুক্তিযোদ্ধাদের খবরাখবর নিতে। তবে সেটা “মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে কাজ করার জন্যে একটা ফাঁদ ছিলো। আমাদের গোপনীয় কাজকর্মে জনাব এল..চৌধুরী উৎসাহ দিতেন। তিনি আমাকে বলতেন “যা করো খুব সাবধানে করো। “জনাব এল..চৌধুরী সতর্ক না করলে হয়তো সেই ফাঁদে অনেকেই আটকে যেত। এল..চৌধুরী ছিলেন একজন নীরব আলোর দিশারী। তাঁর কাজ ছিলনীরবে নিভৃতে তরুণ সমাজকে, জাতিকে আলোর পথে টেনে নেয়া। স্বাধীনতার পরপরই তারই অনুপ্রেরণায় ৩ দেওয়ান বাজার লেনের চট্টগ্রাম এর বাসায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রথম সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সাহিত্য সভায় এত লোক সমাগম হয় যে, সেটা আর ঘরোয়া সাহিত্য সভা থাকেনি।

মহৎপ্রাণ এল.এ চৌধুরী ১৯১৪ সালে চট্টগ্রামের রাউজান থানার গহিরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম লুৎফে আহমেদ চৌধুরী। তাঁর পিতার নাম মৌলভী আব্দুল লতিফ। তিনি “আব্দুল লতিফ মাষ্টার” হিসেবেই খ্যাত ছিলেন। শিক্ষা বিস্তারের অবদানের জন্য তিনি সরকারি পদক প্রাপ্ত হন। তাঁদের পরিবার কাজী পরিবার নামেই সুপরিচিত। এল..চৌধুরী তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তাঁর বড় ভাই মরহুম জনাব আহমদ কবির চৌধুরী একজন শিক্ষাব্রতী ও সমাজ হিতৈষী এবং মেজো ভাই জনাব আহমদ সাগীর চৌধুরী চল্লিশ দশকে একজন বড় বাগ্মী ছিলেন। তিনি তৎকালীন মুসলিম লীগের চট্টগ্রামের সেক্রেটারী ও কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার আপন ভাগ্নে মহান ২১ প্রথম কবিতায় কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’র রচয়িতা মরহুম কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী তাঁর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে বড় হয়েছিলেন। তার বড় ভাইয়ের ছেলে মরহুম জননেতা জনাব আবদুল্লাহ আল হারুন চৌধুরী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের একজন মহান সংগঠক। মুক্তিযোদ্ধা জনাব আবদুল্লাহ আল নোমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী ছিলেন। বিশিষ্ট সমাজসেবী জনাব আবদুল্লাহ আল আহসান চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ডা. নুরুল ইসলাম সাহেবের প্রতিষ্ঠিত ইউএসটিসি’র ভার্সিটি ও হাসপাতালের প্রোভাইস চেন্সেলরের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর মেজো ভাইয়ের ছেলে ক্রীড়াবিদ মরহুম সাহেদ আজগর চৌধুরী ও মরহুম ক্রীড়াবিদ রাশেদ আজগর চৌধুরী ‘স্টার’ ক্লাব এর মাধ্যমে এবং তাঁদের বহুমাত্রিক সাংগঠনিক প্রতিভা দিয়ে ক্রীড়া জগতে অগ্রগণ্য সংগঠক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তিনি শৈশবে মাকে হারান। তাঁর ছোট খালা মাতৃহারা সকল সন্তানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনিও খুব ব্যক্তিত্বশীলা মহিলা ছিলেন। বাইরের কেউই বুঝতে পারতো না যে, তিনি সৎ মা, এরকম ব্যক্তিত্বের কারণেই হয়তো এল.. চৌধুরীও একজন মহৎ লোকে পরিণত হতে পেরেছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যাখ্যা স্বল্প পরিসরে তুলে ধরা সম্ভব নয়। আমি শুধু একজন আদর্শ পিতার পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করব। তিনি তার সন্তানদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বড় ছেলে জনাব সালাউদ্দিন জঙ্গী চৌধুরী সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং ষাটের দশকে তিনি একজন তুখোড় ছাত্রনেতা ছিলেন। দ্বিতীয় সন্তান মরহুমা সেলিমা সবিহ্‌ শিশুসাহিত্য জগতে সকলের সাথে সুপরিচিত ও সকলের একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি এদেশের সবচেয়ে নিয়মিত ও পাঠকনন্দিত শিশুকিশোর পত্রিকা “টইটম্বুর” এর সার্থক সম্পাদক এবং তিনি একজন লেখিকাও ছিলেন। তৃতীয় সন্তান মেসবাহউদ্দিন জঙ্গী। তিনি বর্তমানে ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তিনিও পিতার মতো নানারকম সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত। তিনি ঢাকা নিউ ইস্কাটনস্থ ইস্পাহানি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতির দায়িত্ব (২০০৩২০০৫ইং) পালন করেন। চিটাগাং জার্নালিস্ট ফোরাম ঢাকা (সি.জে.এফ.ডি’র ২০০৪২০০৫ইং) এর সভাপতি ও রোটারি ক্লাব অব ঢাকা ওয়েস্টের, সভাপতি (১৯৯৮১৯৯৯ইং) হিসাবে দায়িত্ব পারন করেন, এবং চট্টগ্রাম সমিতির ঢাকা এর সাংগঠনিক সম্পাদক, সমিতির দুইবার উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সমিতির মুখপত্র “চট্টলশিখা” এর তিনবার সম্পাদক ছিলেন এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম সমিতি ঢাকার ২০২৪২০২৫ইং ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। মেসবাহ একজন কবি। আমি নিজেই তার কবিতার ভক্ত। বুরহানউদ্দিন জঙ্গীর কথা তো আগেই লিখেছি। তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই আমার কাছে সর্বাধিক সমাদৃত। তিনি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দৈনিক স্বাধীনতা পত্রিকার শিশুকিশোরদের পাতা, “নতুন কুঁড়ি আসরের” প্রতিষ্ঠাতা পরিচালনা সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন সরকার দেশের পত্রিকার সংখ্যা সীমিত করলে তাঁকে ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে আত্মীকরণ করা হয়। দ্বিতীয় মেয়ে কাউসার পারভীন চৌধুরী ম্যানিলার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে কাজ করেন। তিনি ডক্টর ইন এডুকেশন। তৃতীয় মেয়ে রাশেদা কবির ডলি। তার স্বামী জনাব কবির আহমদ একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। চতুর্থ ছেলে গীতিকার শহীদ মাহমুদ জঙ্গী, তিনি চট্টগ্রামের এমইএস কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। তিনি একজন ব্যবসায়ী। ছোট মেয়ে সুভ্রানা শামীম মুকুল আর্টিস্ট, তিনি ঢাকায় “গ্যালারি ২১ ঢাকা” এর স্বত্বাধিকারী। তার স্বামী ছিলেন বিআইডিএস ঢাকা এর সাবেক মহাপরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. ফেরদৌস মুর্শিদ। পঞ্চম ছেলে মরহুম ওমর মাহমুদ জঙ্গী, তিনি একজন সমাজসেবী ও ব্যবসায়ী ছিলেন। ষষ্ঠ ছেলে আশিকমাহমুদ জঙ্গী, দেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স ঢাকাএর জি.এম ছিলেন। তিনি মরমী গানের শিল্পী। কনিষ্ঠ সন্তান মইনউদ্দীন মাহমুদ জঙ্গী, তিনি কম্পিউটার সায়েন্সে উচ্চ ডিগ্রী নিয়ে বর্তমানে আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় কম্পিউটার সম্পর্কিত কাজে কর্মরত আছেন। এল.. চৌধুরী সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ে তারুণ্যের হয়ে তাঁর সামাজিক কর্মকান্ডের মতো নিজের পরিবারটিও সুশৃঙ্খলভাবে গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর সকল কাজের পাশাপাশি আদর্শ পিতার ভূমিকাটিও বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা আজকে তাঁর অন্যান্য ভূমিকার কথা না তুলে আদর্শ পিতার কথাটি উল্লেখ করলাম এই কারণে যে, আমরাও তো তাঁর আদর্শিক অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত। ঐ পরিবারে মিশে আমিও তো কিছু না কিছু ভালো কাজে প্রভাবিত। তিনি চট্টগ্রাম থেকে “আল হেলাল” নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করেন। এ.কে.ফজলুল হকের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে কাজ করে গেছেন দেশ গড়ার রাজনীতি। শুধু তাই নয়, ১৯৫৪ সালে শেরে বাংলার কৃষক শ্রমিক পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ও ঐতিহাসিক যুক্তফ্রন্টের চট্টগ্রাম জেলার সম্পাদক হিসেবেও তিনি নেতৃত্ব দেন। পথ গড়ে যাওয়ার এ সদিচ্ছাকে জনগণের মনে প্রোথিত করার জন্য তিনি দৈনিক আজাদী ও বিভিন্ন পত্রিকায় সমাজ সচেতনমূলক ও প্রতিবাদী প্রবন্ধ লিখেছেন এবং বিবৃতি দিয়েছেন। পরবর্তীতে দেশের সব বড় গণতান্ত্রিক দল এক হয়ে পাকিস্তানের সামরিক প্রধান জেলার আইয়ুব খানের মার্শাল’ল বিরোধী আন্দোলনে “ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট” গঠিত হলে তিনি চট্টগ্রাম জেলার ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে “ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ও জনগণ” নামে একটি প্রন্থও তিনি রচনা করেন। যেটা পক্ষাস্তরে স্বাধিকার ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অনেকটুকু বেগবান করে। তিনি কৃষক ও শ্রমিক স্বার্থে রাজনীতি পরিচালিত হোক এটাই চাইতেন। উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর দেওয়ান বাজার লেনস্থ বাসভবন হতে স্বাধীনতা বিরোধীদের দ্বারা অসুস্থ শরীরে বৃদ্ধ বয়সে তিনি গ্রেফতার হন। বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী হিসেবে তিনি রাউজান গহিরা হাই স্কুল, মুসলিম এডুকেশন সোসাইটি, এম..এস কলেজ ও হাইস্কুল, চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজ ও চট্টগ্রাম শহর সমাজ কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম যক্ষ্মা সমিতির আজীবন সদস্য এবং চট্টগ্রাম ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের সদস্যসহ বিভিন্ন শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজ কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ১৯৫৪ সালে চট্টগ্রাম ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের সদস্যসহ বিভিন্ন শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থেকে সমাজ ধর্ম, মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রাখেন। এই মহৎপ্রাণ ব্যক্তি ১৯৭৬ সালে ১৩ জুন ইন্তেকাল করেন।

লেখক: শিশুসাহিত্যিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রাক্তন সহকারী পরিচালক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনারী : আমিই মূল্যহীন
পরবর্তী নিবন্ধআমার দেশ আমার শহর