খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে আবারও শুরু হয়েছে এলাচ নিয়ে কারসাজি। বাজার চাহিদা না থাকার পরেও শুধুমাত্র ট্রেডিংয়ের (হাতবদল) কারণে গত দুই মাস আগে আকাশচুম্বি দাম উঠে পণ্যটির। তখন মাসের ব্যবধানে এলাচের দাম কেজিপ্রতি এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ২৫০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। অথচ সে সময় প্রত্যেক দোকান গুদামে পর্যাপ্ত এলাচের মজুদ ছিল। পরবর্তীতে দাম কমে কেজিতে ১ হাজার ৬০০ টাকায় নেমে আসে। তবে গত দুই–তিন ধরে আবারও উর্ধ্বমুখী রয়েছে এলাচের বাজার। হাতবদলের কারণে কেজিতে ৩০০ টাকা বেড়ে বর্তমানে এলাচ ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় সব ধরনের মসলা আমদানি করতে হয়। এলাচ আসে গুয়েতমালা থেকে। বাকি সব পণ্য ভারত থেকেও আসে। তবে এটি ঠিক বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে গরম মসলার বুকিং দর বেড়েছে। তবে বাজার চাহিদা এবং মসলার মজুদ হিসেব করলে এই মুহূর্তে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। খাতুনগঞ্জের কয়েকজন গরম মসলা ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের কিছু ট্রেডার আছে, যারা সব সময় তেল চিনিতে বিনিয়োগ করেন, তারা কয়েক মাস আগের মতো আবারও এলাচের বাজারে ট্রেডিং ব্যবসা শুরু করেছেন। তাই গত দুই–তিনদিনের মধ্যে এলাচের দাম কেজিতে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এছাড়া বর্তমানে জিরা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০ টাকা, গোল মরিচ ৬১০ টাকা, দারচিনি ৩০৫ টাকা এবং লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩৭০ টাকায়। খাতুনগঞ্জের একাধিক মসলা ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খাতুনগঞ্জের একশ্রেণীর ডিও বা স্লিপ ব্যবসায়ী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এক প্রকার জুঁয়া খেলেন। তারা নিজেদের মধ্যে টেডিং করে ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম উঠানামা করান। এদের কেউই প্রকৃত মসলা ব্যবসায়ী নয়। দিনে যে পরিমাণ এলাচ কেনাবেচা হয়, এর মধ্যে এক কেজিও বাইরে ডেলিভারি হয় না। এসব পণ্য কেবল গুদাম পরিবর্তন হয়।
খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক হাজী জসিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন, এলাচসহ সব ধরণের গরম মসলার বেচাবিক্রি ঠান্ডা। এখানে যা হচ্ছে সব ট্রেডিং। এদের মধ্যে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা সংখ্যা খুবই কম। এরা যখন যে পণ্যের দাম বাড়ে, সে পণ্যের দিকে দৌঁড়ায়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভরশীল। ওরা প্রয়োজন মতো দাম ওঠানামা করান। গরম মসলা স্লো আইটেম। এটি প্রতিদিনের রান্নায় খুব বেশি ব্যবহৃত হয় না। তারপরেও থেমে নেই ব্যবসায়ীদের কারসাজি। প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, বাজার নিয়ন্ত্রণে তারা যেন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে।