সাতকানিয়ার কেরানিহাট এলাকায় দুই মাস ধরে মোবাইলের মাধ্যমে চাঁদা চেয়ে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিচ্ছিল মো. এমরান। তার প্রধান সহযোগী মো. রিয়াজ উদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে সাতকানিয়া পৌরসভার ভোয়ালিয়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মো. রিয়াজ উদ্দিন পৌরসভার চৌধুরী পুকুর পাড় এলাকার মো. হোসেনের ছেলে।
জানা যায়, গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে ৩টি মোবাইল নম্বর থেকে মুদি দোকানি ও অন্যান্য দোকানদারসহ প্রায় ২৫–৩০ জন ব্যবসায়ীর কাছে ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন নিজেকে এলাকার বাদশা পরিচয় দেয়া এক ব্যক্তি। তার চাহিদা মত চাঁদা না দিলে দোকানে আগুন দেয়াসহ বোমা মেরে ব্যবসায়ীদেরকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এতে চরম উৎকন্ঠায় ছিল ব্যবসায়ীরা। চাঁদাবাজ কর্তৃক হুমকি পাওয়া ব্যবসায়ীরা থানায় ১৫টি অভিযোগ, একটি জিডি ও একটি মামলা দায়ের করাসহ সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলায় দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর কাছেও লিখিত অভিযোগ করেন। এর মধ্যে চাঁদা না পেয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জোনাইদের মেট্রেসের দোকান ও মোরশেদ আলমের তেলের দোকান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ব্যবসায়ী মো. জোনাইদ গত ২২ নভেম্বর অজ্ঞাতনামা আসামি করে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. রায়হান উদ্দিন জানান, কেরানিহাট এলাকায় কিছু ব্যবসায়ীদের মুঠোফোনের মাধ্যমে চাঁদা দাবি করে হুমকি দেয়া এবং চাঁদা না পেয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়ার ঘটনায় রিয়াজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। হুমকি দেয়া মোবাইল সিমের সিডিআর ও রেজিস্ট্রেশন পর্যালোচনা করে তাকে শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনার মূলহোতা চাঁদাবাজ বাদশা পরিচয় দানকারী মো. এমরানের নাম প্রকাশ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার রিয়াজের কাছে পাওয়া তথ্যের বরাতে পুলিশ জানায়, ৬ মাস আগে চাঁদাবাজ বাদশা পরিচয় দানকারী মো. এমরান টেকনাফ থানা এলাকায় একইভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চেয়ে মোবাইলের মাধ্যমে হুমকি দেয় এবং কামাল নামের এক ব্যক্তির দোকানে আগুন দেয়াসহ বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে।
সাতকানিয়া থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি রিয়াজ উদ্দিনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মূলত রিয়াজ উদ্দিন তার আত্মীয় স্বজনদের এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে সিম কার্ড উত্তোলন করত এবং সে সিম কার্ডগুলো তার শ্যালক চাঁদাবাজির ঘটনার মূল হোতা বাদশা পরিচয়দানকারী মো. এমরানকে সরবরাহ করত। এমরান সেই সিম কার্ডগুলো ব্যবহার করে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ঘটনার মূল আসামি মো. এমরান হোসেনকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।