শক্তিশালী ভূমিকম্প অর্ধলক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার তিন মাস পর দেশটির সামপ্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে তুরস্ক। দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান আরেক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন কিনা, রোববারের ভোটে তার–ই ফয়সালা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি। কেবল প্রেসিডেন্টই নন, সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলা ভোটে তুর্কিরা নতুন পার্লামেন্ট ও এর ৬০০ এমপিও ঠিক করবেন। রোববারের ভোটে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিপক্ষ কামাল কিলিসদারোগলু, জয়ী হলে যিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কমানোর অঙ্গীকার করেছেন। ২০১৬ সালে ব্যর্থ এক অভ্যুত্থানচেষ্টার পর এরদোয়ান প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করেছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
কিলিসদারোগলুর পেছনে বিরোধীদের যে জোট আছে, সেটি বেশ বড় হওয়ায় তার জয়ের সম্ভাবনা প্রবল হলেও এরদোয়ানের সঙ্গে তার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেই মনে হচ্ছে। এমন এক সময়ে তুরস্কের প্রায় সাড়ে ৬ কোটি ভোটারকে তাদের নেতা বেছে নিতে হচ্ছে, যখন অর্থনৈতিকভাবে দুর্দশা মোকাবেলায় দেশটির বেশিরভাগ মানুষকেই খাবি খেতে হচ্ছে। সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ৪৪ শতাংশে পৌঁছে গেছে, প্রকৃত অবস্থা এর চেয়েও ভয়ানক বলে দাবি অনেকের। তিন মাস আগের জোড়া ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির ১১টি প্রদেশের দশা সবচেয়ে খারাপ। এসব এলাকায় এরদোয়ানের ভোট কমবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তার মতো প্রথমবার ভোটার হওয়ার সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ, এদের রায় রোববারের ভোটে বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জার্মানি, ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশে থাকা প্রায় পৌনে দুই কোটি ভোটার এরই মধ্যে তাদের ভোট দিয়ে দিয়েছে। এবার প্রবাসী ভোটের হার ৫৩ শতাংশ, যা নতুন রেকর্ডও গড়েছে। তবে ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকের পক্ষে এবার ভোট দেওয়াটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। অনেকেই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে, কিন্তু ভোট দেওয়া যাবে কেবল নিবন্ধিত এলাকা থেকেই। রোববারের ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে শীর্ষ দুই প্রার্থীকে নিয়ে হবে রান–অফ ভোট।