আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানকে সম্মানিত নেতা হিসেবে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে তিনি এ প্রশংসা করেন। ট্রাম্প এরদোগানকে ‘শক্ত’ ও ‘স্পষ্ট ধারণার’ নেতা আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি দারুণ কাজ করছেন। বিশেষ করে সিরিয়ার সংকট মোকাবিলায় এরদোগানের অবদান প্রশংসনীয়। সিরিয়ার সমস্যা সমাধান তার বড় অর্জন, আমি চাই এর কৃতিত্ব তাকে দেওয়া হোক।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদকে উৎখাতে এরদোগানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তিনি প্রভাব রেখেছেন বলেও উল্লেখ করেন ট্রাম্প।
রাশিয়া–ইউক্রেন ইস্যুতেও এরদোগানের প্রভাবশালী অবস্থানকে স্বীকৃতি দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় নেতাদের কাছ থেকেও তিনি সম্মান পান। আমিও তাকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। বৈঠকে আঞ্চলিক সংকট, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, তুরস্ক চাইলে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের এফ–৩৫ জেট ক্রয়ের সুযোগ পেতে পারে। তবে শর্তস্বরূপ রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি। এরদোগানও বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি বিশ্বাস করি, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানে সক্ষম হবে।” একইসঙ্গে তিনি হাল্কব্যাংক ইস্যুতেও আলোচনা করার ইঙ্গিত দেন। ২০১৯ সালে রাশিয়ার এস–৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার কারণে তুরস্ককে এফ–৩৫ প্রোগ্রাম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সেসময় যুক্তরাষ্ট্র সিএএটিএসএ আইনের আওতায় আঙ্কারার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তুরস্ক এখন আবারও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পুনরুদ্ধারে আগ্রহী।
অন্যদিকে এরদোগান উত্তর সিরিয়ায় দাঐশের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রক্সি বাহিনী ওয়াইপিজি ব্যবহার বন্ধ করার দাবি জানান। তুর্কি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা বিকল্প সন্ত্রাসবিরোধী পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন। এছাড়া গাজায় ইসরাইলি হামলারও তীব্র সমালোচনা করেন এরদোগান। জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে তিনি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, মানবিক করিডোর ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাস পুনর্গঠন ও পারস্পরিক স্বার্থ অগ্রসরের নতুন সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।